নিষিদ্ধ সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ দাবি করেছে স্বাধীন খলিস্তান। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
স্বাধীন ও সার্বভৌম খলিস্তান রাষ্ট্রের দাবিতে কানাডার কট্টরপন্থী শিখ গোষ্ঠীর গণভোটের আয়োজন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে সে দেশের ভারতীয় হাই কমিশনের তরফে এ বিষয়ে ‘কূটনৈতিক সতর্কবার্তা’ (ডিমার্শ) পাঠানো হয়েছে।
ভারতে নিষিদ্ধ খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে) আগামী ৬ নভেম্বর অন্টারিওতে জমায়েত এবং গণভোটের ডাক দিয়েছে। এই উদ্যোগকে সরাসরি ‘জঙ্গি কার্যকলাপ’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে নয়াদিল্লি। কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো কূটনৈতিক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, সে দেশের মাটি ব্যবহার করে ভারত বিভাজনের চেষ্টা শুরু করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে এসএফজে-কে ‘আন’ল’ফুল অ্যাক্টিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট’ (ইউএপিএ)আইনের আওতায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। সংগঠনের প্রধান গুরুপতবন্ত সিংহ পন্নুনের বিরুদ্ধে ভারতের ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে নয়াদিল্লির তরফে আবেদনও জানানো হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই আবেদন ইন্টারপোল খারিজ করে দেয়। এর পরেই ওই বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখ গোষ্ঠী কানাডায় গণভোটের আয়োজনের জন্য নতুন উদ্যমে তৎপরতা শুরু করেছে।
২০২০ লন্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারেও স্বাধীন ও সার্বভৌম খলিস্তান রাষ্ট্রের দাবিতে বড় জমায়েত করেছিল এসএফজে। নয়াদিল্লি বারবার লিখিত এবং মৌখিক অনুরোধ করা সত্ত্বেও ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের সরকার নিষিদ্ধ করেনি ভারত-বিরোধী ওই সমাবেশটিকে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর কানাডার ব্রাম্পটনেও খলিস্তান রাষ্ট্রের দাবিতে সমাবেশ করে ওই সংগঠন। এর পিছনে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মদত ছিল বলে ভারতের অভিযোগ।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর (আইবি) সূত্রের খবর, বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজ চালায় এই সংগঠনটি। এসএফজে-র হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এজেন্টরা সক্রিয়। ভারত-বিরোধী কার্যকলাপে আর্থিক মদত যোগায় এই নিষিদ্ধ সংগঠন। এমনকি নেটমাধ্যমে ভারত-বিরোধী পোস্ট দিতে পারলে বিদেশের কোনও দেশে নাগরিকত্ব পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণদের প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়।
সাম্প্রতিক কালে কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলনের সমর্থনে কানাডা থেকে একাধিক বিবৃতি দিয়েছিল এসএফজে। গত সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মোদীর আমেরিকা সফরের সময় বিক্ষোভ কর্মসূচিরও ডাক দিয়েছিল তারা। এর পরেই কেন্দ্রের তরফে খলিস্তান আন্দোলনের সমর্থক ওই সংগঠনটির কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে সক্রিয়তা শুরু হয়।
কয়েক মাস আগে একটি ভিডিয়ো বার্তায় (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) এসএফজে প্রধান পন্নুন দাবি করেছিলেন, পঞ্জাবে বিধানসভা ভোটের আগে আম আদমি পার্টি (আপ)-র অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং ভগবন্ত মান তাঁদের দলের জন্য ৬০ লক্ষ ডলারের বেশি অনুদান চেয়েছিলেন খলিস্তানপন্থী শিখদের কাছে।