প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। —ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বার্ষিক সম্মেলনের আগে আগামী দু’মাস ধারাবাহিক বৈঠক করবে নয়াদিল্লি-মস্কো। এই মাসেই ‘টু প্লাস টু’ মেকামিজমের বৈঠক হওয়ার কথা। তা ছাড়াও দু’টি যৌথ কমিশনের বৈঠক হবে ভারত এবং রাশিয়ার।
অর্থনীতি এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এই দুই যৌথ কমিশনের বৈঠকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন যথাক্রমে সে দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রী। রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ইউরি বরিসভের যৌথ কমিশনের বৈঠকে যোগ দিতে নয়াদিল্লি আসার কথা। সম্প্রতি রান্নার জ্বালানি সংক্রান্ত একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সই হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। যে চুক্তির ফলে রাশিয়ার সংস্থা থেকে সরাসরি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস পাবে ভারত। শক্তি ক্ষেত্রে আরও কিছু বড় প্রকল্প তৈরির ব্যাপারে কথা হবে কমিশনের বৈঠকে। পাশাপাশি ইরান–ভ্লাদিভস্তক-চেন্নাই নৌ-পরিবহণ সংযোগের কথাও ভাবা হচ্ছে।
শক্তি ক্ষেত্রের পাশাপাশি জোর দেওয়া হবে প্রতিরক্ষা সমঝোতার দিকেও। আগামী দশ বছরের জন্য দু’দেশের সামরিক সহযোগিতা চুক্তি সই হওয়ার কথা বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে। মধ্য এশিয়া ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রুশ সহযোগিতা ক্ষেত্রটিও বাড়বে আগামী দিনে।
রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠকের আগে আগামী ৯ এবং ১০ তারিখ আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য আঞ্চলিক শক্তিদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্তরের একটি বৈঠকের আয়োজন করছে ভারত। সেখানে পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানালো হলেও সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে ইমরান খানের সরকার। এ ছাড়া চিন, রাশিয়া, উজ়বেকিস্তান, তাজ়িকিস্তান এবং ইরানের প্রতিনিধিরা ওই সম্মেলনে হাজির থাকবে। আসার কথা রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল নিকোলাই পাত্রুশেভের।
আমেরিকার নেতৃত্বে প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অক্ষ নিয়ে রাশিয়া সুর গরম করার পরে সমুদ্রপথে বাণিজ্য ও কৌশলগত দিকগুলি নিয়ে সহযোগিতার জন্য নতুন অক্ষ তৈরিতে অগ্রণী ভারত। সেখানে রাশিয়াকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। চিনের বন্ধু রাশিয়াকে সঙ্গী করা ভারতের বিশেষ কৌশল বলেই মনে করা হচ্ছে। ভারত জানিয়েছে, রাশিয়া এই সমুদ্রপথে আরও বেশি সহযোগিতা বাড়াক, এটাই কাম্য। বলা হয়েছে, দু’দেশের স্বার্থ এখানে জড়িত। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, সুস্থিতি এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়লে রাশিয়ারও লাভ। মস্কো এই উদ্যোগে যুক্ত হতে রাজি হয়েছে বলেই খবর। আসন্ন বার্ষিক সম্মেলনে বা তার আগের ধারাবাহিক বৈঠকগুলিতে বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে কূটনৈতিক সূত্রের খবর।