প্রতীকি ছবি
স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা প্রস্তুতি বৈঠকে বাংলার ভূমিকা নিছক শ্রোতার। বুধবার ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। কমিটির সদস্য হিসেবে সেখানে হাজির ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শুধু শোনা ছাড়া তাঁর অন্য কোনও ভূমিকা ছিল না। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি, কর্নাটকের নেতা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া, মহারাষ্ট্রের নেতা শরদ পওয়ার, পঞ্জাবের অমরেন্দ্র সিংহ, লতা মঙ্গেশকর-সহ অনেকেই। ছিলেন গুজরাতের রাজ্যপালও।
স্বাধীনতার সংগ্রামে বাংলার ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে এই বৈঠকে মমতার বলার সুযোগ না পাওয়া অনেকের চোখেই অনভিপ্রেত লেগেছে। দেশের প্রাক্তন সংস্কৃতি সচিব তথা সাংসদ জহর সরকার বলেন, ‘‘কে বা কারা সেখানে বলার সুযোগ পেয়েছেন সেটা আলোচ্য নয়। বিষয় হল, স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার অবদান মনে থাকলে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কিছু শোনা হবে না! দেশের শাসকেরা কি মনে করেন স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে জাতীয় স্তরে প্রস্তুতি বৈঠকে বাংলার কিছু বলার নেই? এটা ব্যক্তিগত ভাবে কোনও নেতানেত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর অপমান নয়। সমগ্র বাংলার অপমান।’’
সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘বিস্ময়কর ব্যাপার! বাংলাকে বয়কট করা হলে, অন্য কথা। তা না হলে বাংলার মতো সচেতন রাজ্যকে চুপ করিয়ে রেখে কী ভাবে এই প্রস্তুতি সম্ভব?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘স্বাধীনতা আন্দোলনের শুরু তো এই বাংলাতেই হয়েছিল। গোটা দেশ তাকে অনুসরণ করেছিল। সে কথা তো ভুলবার নয়।’’
এই বৈঠকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা বক্তৃতা করেন দলীয় কার্যালয়ে বসে। ফলে তাঁর দলের নাম ও প্রতীক দিয়ে সাজানো ছিল নড্ডার পিছনের চালচিত্র। প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। সরকারি স্তরের বৈঠকে এই ধরনের দলীয় প্রতীক দেখানো কতদূর সমীচীন, তা নিয়ে। এ দিনের ওই বৈঠকের সঞ্চালক ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেষ বক্তা। প্রধানমন্ত্রী আজ বৈঠকে বলছেন, যখন আজাদির অমৃত মহোৎসব পালন হচ্ছে তখনই স্বাধীনতার শতবর্ষ বা ২০৪৭-কে নজরে রেখে নতুন লক্ষ্য স্থির করতে হবে। তিনি যুক্তি দেন, ‘‘আমরা বরাবর আমাদের অধিকারের দিকে বেশি জোর দিয়ে এসেছি। কিন্তু কর্তব্যপালনের মধ্যে বেশি মহত্ব রয়েছে। আজাদির অমৃত মহোৎসব তরুণদের কর্তব্যের বীজ বুনে দেবে।’’