বিপর্যস্ত মুম্বই। ছবি; পিটিআই।
ছ’দিন একনাগাড়ে বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মুম্বই-সহ গোটা মহারাষ্ট্র। এখনও পর্যন্ত সেখানে ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে উত্তর মুম্বইয়ের মালাডে দেওয়াল ধসে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। বুধবার সকালে ধ্বংসস্তূপ থেকে পাপ্পু গমেশ শাহ নামে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়েছে। এই ধরনের বাড়ি বা দেওয়াল ভেঙে পড়ার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮০ জন আহত হয়েছেন সেখানে। বিভিন্ন এলাকায় জলবন্দি হয়ে রয়েছেন বহু মানুষ।
তবে এখনই এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই মিলবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বুধবারও সেখানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, এ দিন দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে উপকূলবর্তী এলাকায় ৪.৬৯ মিটার উচ্চতায় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে।
তবে বরাবরের মতো গোটা রাজ্যের তুলনায় এ বারও মুম্বইয়ের উপরই এই বৃষ্টির প্রভাব সবচেয়ে বেশি। গোটা শহর জলমগ্ন হয়ে পড়ায় বিমান, রেল এবং সড়ক পরিবহণ একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৫২টি বিমানের উড়ান বাতিল করা হয়েছে। ঘুরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৫৪টি বিমান।
আরও পড়ুন: বাঁধ ভেঙে মহারাষ্ট্রে বানভাসি ৭ গ্রাম, মৃত ৬, নিখোঁজ অন্তত ২০
যে রেল পরিবহণের উপর নির্ভরশীল গোটা মুম্বই, লাগাতার বৃষ্টিতে তার উপরও প্রভাব পড়েছে। এ দিন সকালে চার্চগেট থেকে ভিরার পর্যন্তই শুধুমাত্র ট্রেন চলাচল করেছে। মধ্য এবং পশ্চিম রেলের বহু দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়, যার মধ্যে অন্যতম হল, মুম্বই-বারাণসী মহানগরী এক্সপ্রেস, মুম্বই-পুণে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, পুণে-মুম্বই ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, পুণে-সোলাপুর এক্সপ্রেস, পানভেল-পুণে এক্সপ্রেস। সময় পরিবর্তন করা হয় এলটিটি-গুয়াহাটি, এলটিটি-দ্বারভাঙা, এলটিটি-পাটলিপুত্র এবং এলটিটি-কামায়নী এক্সপ্রেস।
রেলের এক আধিকারিক জানান, লোকাল ট্রেনে বহু যাত্রী আটকে পড়েছিলেন। রেলকর্মী, আরপিএফ জওয়ানরা মিলে তাঁদের উদ্ধার করেন। স্টেশনেই চা-বিস্কুট এবং অন্য খাবার দেওয়া হয় তাঁদের। নিরাপত্তার খাতিরে ইতিমধ্যেই শহরতলির বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার দলের বিধায়কদের জন্য একটি নতুন আবাসন উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা ছিল মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: অগ্ন্যুত্পাতে ধ্বংস হয়েছিল গোটা দ্বীপ, আজ সেখানেই তৈরি হয় বিশ্বের সেরা ওয়াইন
মঙ্গলবার বিকালে ওয়াসিম জেলায় জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল চার পড়ুয়া। তাদের মধ্যে পূজা বালু পওয়ার নামের চোদ্দ বছরের এক কিশোরী এবং তার সাত বছরের ভাই পারস বালু পওয়ারকে উদ্ধার করা গেলেও, বাকি দু’জন এখনও নিখোঁজ। অন্য দিকে জলোচ্ছ্বাসে বাঁধের স্লুইস গেট ভেঙে রত্নগিরি জেলায় বানভাসি হয়েছে সাতটি গ্রাম। তাতে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ অন্তত ২০ জন। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।