ভোপালের চিরায়ু হাসপাতালে এ ছবিই এখন ভাইরাল। ছবি: সংগৃহীত।
হাসপাতালের যে দিকে নজর যায়, জল থইথই করছে। জলে ভাসছে করিডর থেকে রোগীর কেবিন। সেই জল ঠেলেই হাসপাতালে ঘোরাফেরা করছেন রোগীর পরিজন থেকে চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের কাজকর্ম ছেড়ে জল সরাতে ব্যস্ত কর্মীরা। মধ্যপ্রদেশের ভোপালে চিরায়ু হাসপাতালের এ ছবিই এখন ভাইরাল। গত দু’দিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টির ফলে রাজ্যে দেখা দিয়েছে বন্যা। সেই সঙ্গে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ভেঙে দিয়েছে ২১ বছরের পুরনো রেকর্ডও। মধ্যপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, বন্যা দুর্গত এলাকায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। নর্মদা নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন জেলায় অন্তত ৪০টি গ্রামে বারোশো জনের আটকে পড়ার খবর মিলেছে। রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে উদ্ধারকাজে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। উদ্ধারকাজে ডাকা হয়েছে সেনাবাহিনীকেও। মধ্যপ্রদেশে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
সম্প্রতি ভোপালের ওই চিরায়ু হাসপাতালেই করোনার চিকিৎসার জন্য ভর্তি ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। ফলে বন্যার জলে ভাসা সেই হাসপাতালের ছবিই সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও ছড়িয়েছে। তবে শুধুমাত্র ভোপালেই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ অতি ভারী বৃষ্টির সঙ্গে হয়েছে শিলাবৃষ্টি। শিবরাজ সিংহ বলেন, “বন্যায় প্লাবিত হয়েছে মধ্যপ্রদেশের ১২টি জেলার অন্তত ৪৫৪টি গ্রাম।”
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। সঙ্গে রয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। হোসাঙ্গাবাদে উদ্ধারে নেমেছে সেনাবাহিনীও।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে আকাশপথে বন্যা বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন শিবরাজ। তিনি বলেন, “আমি নিজে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। উদ্ধারকাজের জন্য পাঁচটি চপারও চেয়েছি।” সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত আট হাজার জনকে বন্যা কবলিত এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: উৎসবের দিনে ‘দো গজ কি দূরি, মাস্ক জরুরি’, ‘মন কি বাত’-এ বার্তা মোদীর
আরও পড়ুন: এসি বন্ধ, থাকবে না টোকেন, কড়া বিধিনিষেধে চলবে দিল্লি মেট্রো
মধ্যপ্রদেশে আগামী ৪৮ ঘণ্টা টানা বৃষ্টি চলবে বলে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এর আগে ১৯৯৯ সালে এমন ভারী বৃষ্টি হয়েছিল মধ্যপ্রদেশে। ২১ বছরের সেই রেকর্ডও ভেঙে গিয়েছে এ বার। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত রাজ্যে ৮১৫.২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। শুধুমাত্র ভোপালেই এখনও পর্যন্ত ১০২২.৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে আপাতত এই পরিস্থিতির বদল ঘটবে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। রেড অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নরসিংহপুর, ছিন্দওয়াড়া, সেওনি, বালাঘাট, বেতুল এবং হোসাঙ্গাবাদ জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ অতি ভারী বৃষ্টিপাত হবে। সেই সঙ্গে রতনাম, নিমুচ, মন্দসৌর, আগর, সাজাপুর, রাজগড়, সেওপুরকালান জেলায় মাঝারি বৃষ্টির চলবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা টানা বৃষ্টি চলবে বলে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।
মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান জানিয়েছেন, নিজের অফিস থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণের যাবতীয় কাজকর্ম তদারকি করছেন তিনি।