ফাইল চিত্র।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আরও বেশি করে আত্মনির্ভর হওয়ার উপরে জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এক সময়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং তারও পরবর্তী সময়ে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের অন্যতম সহযোগী রাশিয়া। বর্তমান সময়ে রাশিয়ার কাছ থেকে এস -৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা হস্তান্তরিত করার কাজ চালু রয়েছে। ২০১৮ সালে হওয়া চুক্তি সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হতে আরও বেশ কয়েক বছর সময় লেগে যাওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া-ইউক্রেনের বিবাদের কারণে আমেরিকা-সহ অন্য দেশের মস্কোর উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেওয়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে সমস্যায় ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও রাশিয়ার দাবি, সময় মতোই ওই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা ভারতে পাঠানো হবে।
এই আবহে আজ তাই প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত একটি ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, বর্তমানে এ দেশে তৈরি হাতিয়ার যুদ্ধে ব্যবহারের সময় এসেছে। এর প্রধান সুবিধা হল, সে ক্ষেত্রে দেশকে হাতিয়ারের সরবরাহের জন্য কারও উপরে নির্ভর করে থাকতে হবে না।
আজ প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষা খাতে আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার জন্য বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিকে লাভ-ক্ষতি ভুলে দেশের জন্য কিছু করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল বোঝাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘যদি একটি দেশ দশটি দেশকে অস্ত্র বিক্রি করে, তা হলে ওই দশটি দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে কোনও নিজস্বতা থাকে না। এই নিজস্বতা বা আক্রমণের ময়দানে শত্রুকে চমক দেওয়া তখনই সম্ভব, যখন প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত অস্ত্র দেশীয় ভাবে তৈরি করা সম্ভব হবে।’’ প্রধানমন্ত্রীর মতে, তা ছাড়া বিদেশে তৈরি অস্ত্র ব্যবহারের অন্য একটি বড় সমস্যা হল, সেগুলি পুরনো হয়ে যাওয়া। প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘‘বিদেশ থেকে অস্ত্র আনার প্রশ্নে অনেক ক্ষেত্রে সময় এত বেশি লেগে যায় যে, যত দিনে সেই অস্ত্র সেনার হাতে পৌঁছয়, তত দিনে তা বাতিল হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে যায়।’’
আজ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মোদী বলেন, দেশে প্রতিরক্ষা সামগ্রীর উৎপাদনে উৎসাহ দিতে প্রায় ২০০টি প্রতিরক্ষা সামগ্রীকে বিদেশি প্রতিরক্ষা সংস্থা থেকে কেনা যবে না বলে নিয়ম জারি করেছে কেন্দ্র। মোদীর দাবি, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দু’বছরে প্রায় ৫৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা খরচ হবে দেশীয় ভাবে তৈরি প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনার কাজে। তিনি জানান, ২০০১-২০১৪ সালে যেখানে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত উৎপাদন করার লক্ষ্যে ২০০টি সংস্থাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল, সেখানে গত সাত বছরে ৩৫০ সংস্থাকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কাজের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।