বরফ গলতেই নতুন করে অশান্তির মুখে কাশ্মীর। গ্রীষ্মের শুরুতেই বাদগাম-সহ উপত্যকার নানা প্রান্তে স্থানীয় যুবকেরা যে সংখ্যায় পথে নামতে শুরু করেছে তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার। তাদের আশঙ্কা, আসন্ন গ্রীষ্মে উপত্যকার অশান্তির ছবি টপকে যেতে পারে ২০১০ বা ২০১৬-কেও।
দিন দুয়েক আগে বাদগামে দরবা চাদুরায় জঙ্গি দমনের সময়ে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মারা যান তিন জন স্থানীয় যুবক। প্রতিবাদে গত কাল হরতালের ডাক দেয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নামে জনতা। ২ এপ্রিল কাশ্মীরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে ফের হরতালের ডাক দিয়েছে হুরিয়ত। আগামী দিনে বিক্ষোভ-আন্দোলনের নামে পথে নামা সাধারণ মানুষের বিশেষত তরুণদের মৃত্যু কী ভাবে রোখা যায় সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বাহিনীর কাছে। আজ জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি এস পি বৈদ্য সতর্কবার্তায় বলেন, ‘‘সংঘর্ষের সময়ে বাহিনীও বাড়ি বা বুলেটপ্রুফ গাড়ির পিছনে আশ্রয় নিয়ে থাকে। তাই জঙ্গিদের সঙ্গে বাহিনীর সংঘর্ষ চলার সময়ে তরুণদের আসার অর্থ হল কার্যত আত্মহত্যা করতে যাওয়া। কারণ বুলেট জানে না কে জঙ্গি আর কে জঙ্গি নয়।’’
আরও পড়ুন: দাবদাহে নাজেহাল পশ্চিম ভারত, মহারাষ্ট্রে গরমের বলি ৫
গত বছর হিজবুল কম্যাণ্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে উপত্যকা। পুলিশের মতে, বুরহানের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে দক্ষিণ কাশ্মীর থেকে প্রায় ৮৭ জন তরুণ জঙ্গি দলে নাম লেখায়। পাঁচ-ছ’জন যোগদান করে উত্তর কাশ্মীর থেকে। দফায় দফায় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৩০ জন জঙ্গির পাশাপাশি সাত জন সাধারণ নাগরিকও মারা যায়। যাদের অধিকাংশ তরুণ।
তরুণদের এ ভাবে সংঘর্ষের সময়ে বিক্ষোভ দেখানোর পিছনে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে বলেই জানাচ্ছেন গোয়েন্দারা। ডিজি এস পি বৈদ্যের কথায়, ‘‘যে মুহূর্তে কোথাও সংঘর্ষ শুরু হচ্ছে, তখনই দেখা যাচ্ছে গোটা উপত্যকায় কমবেশি তিনশোটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠছে। ওই সব গ্রুপের মাধ্যমে কিশোর-তরুণদের সেনাকে নিশানা করে পাথর ছুড়তে বলা হচ্ছে।’’
গোয়েন্দাদের মতে, কিছু যুবক প্ররোচনায় পা দিচ্ছেন। আবার কিছু জায়গায় নিয়মিত মাস-মাইনে দিয়ে রাখা হচ্ছে পাথর ছোড়ার লোক। মাসিক ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় লোক নিয়োগ করছে হুরিয়ত।