বিজয় রূপাণি।
শেষ মুহূর্তের গুগলিতে মুখ্যমন্ত্রী বদল করে মোদীর রাজ্য গুজরাতের রাশ নিজের হাতেই রাখলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসে নিজের রাজ্যের ভার নরেন্দ্র মোদী তুলে দিয়েছিলেন আনন্দীবেনের হাতে। কিন্তু সব দিক থেকেই বিফল হচ্ছিলেন তিনি। তাঁর ইস্তফার পর আনন্দীবেনের আস্থাভাজন নিতিন পটেলকেই মুখ্যমন্ত্রী করার কথা প্রায় পাকা হয়ে ছিল। আজ দিনভর সাক্ষাৎকার দিয়ে অভিনন্দনও কবুল করছিলেন নিতিন পটেল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে খেলা বদলে রাজ্য বিজেপি সভাপতি বিজয় রূপাণিকে মুখ্যমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নিলেন অমিত শাহ। নাম ঘোষণার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শিলমোহরও নিয়ে নেন টেলিফোনে। আর নিতিন পটেলকে করা হয় উপমুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: গুজরাত সামাল দেবেন বকলমে সেই অমিতই
বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, আনন্দীবেনের ইস্তফার পর সিংহভাগ বিধায়ক চাইছিলেন খোদ অমিত শাহই মুখ্যমন্ত্রী হোন। কারণ, নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে আর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এক সময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বাসনা থাকলেও এখন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি হয়ে যাওয়ার পর আর সে পথে হাঁটতে চান না অমিত শাহ। কিন্তু তাঁর পক্ষে বিধায়কদের এই সমর্থন নতুন মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ে সাহায্য করেছে। আনন্দীবেনের সঙ্গে অমিত শাহের গোড়া থেকেই বনিবনা ছিল না। তাঁকে সরানোর নেপথ্যেও বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন অমিত শাহ। কিন্তু ইস্তফা দিয়েও আনন্দীবেন চাইছিলেন, তাঁর সরকারে ‘সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড’ নিতিন পটেল হাল ধরুন। রাজ্যের পটেল আন্দোলনের মধ্যে নিতিনকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে সদর্থক বার্তাও যাবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তের গুগলি দিয়ে অমিত শাহ নিজের ওজন খাটিয়ে বিজয় রূপাণিকেই মুখ্যমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেন। সমঝোতার সূত্র হিসেবে নিতিন পটেলকে করা হয় উপমুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপি শিবিরের মতে, বিজয় রূপাণি অমিত শাহের সবথেকে ঘনিষ্ঠ। সে কারণে তাঁকে রাজ্যে সভাপতির পদে তিনি বসিয়েছিলেন। আনন্দীবেন জমানায় সংগঠনের রাশ যে ভাবে দুর্বল হয়েছে, তা ঠিক করার জন্য বিজয় রূপাণিকে দরকার। অথচ গত কয়েক দিন ধরেই বিজয় রূপাণি বলে আসছিলেন, তিনি সংগঠনের কাজেই মনোনিবেশ করতে চান। উল্টো দিকে নিতিন পটেল বলতে শুরু করে দিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তিনি রাজ্যের জন্য কী কী কাজ করতে চান। নিতিনের এমন আগ বাড়িয়ে খেলাও পছন্দ করেননি অমিত শাহ। আজ সন্ধ্যায় আমদাবাদের সার্কিট হাউসে তিনি বৈঠকে বসেন। সেখানে বিজয় রূপাণিকেও ডেকে নেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, মুখ্যমন্ত্রী হবেন রূপাণিই। রূপাণই জৈন সমাজের প্রতিনিধি। কিন্তু তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ও অমিত শাহের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে গুজরাতের হারানো ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করতে চাইছেন বিজেপি সভাপতি। যে কারণে নরেন্দ্র মোদীও তাতে আপত্তি করেননি। গোটা বিষয়ে আরএসএসের প্রতিনিধিকেও সামিল করা হয়েছিল। সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই মোদী-গড় এ বারে সামাল দিতে চাইছে মোদী-শাহ জুটি।