নিহত এন কুমারসন। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
পুলিশি অত্যাচারে বাবা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল তামিলনাড়ু। এক অটোচালকের মৃত্যু এ বার তাতে নতুন মাত্রা যোগ করল। হাজতে তাঁর উপরও পুলিশ নৃশংস অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। দীর্ঘ ১৫ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর শনিবার মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এই ঘটনায় দুই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম এন কুমারসন। বীরকেরালাম্পুদুরের বাসিন্দা তিনি। তাঁর এক আত্মীয় জানিয়েছেন, জমি সংক্রান্ত ঝামেলা নিয়ে কিছু দিন আগে কুমারসনকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়। একটা গোটা দিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তার পর শরীরে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে বাড়ি ফেরেন কুমারসন।
পরিবারের লোকজন বার বার জিজ্ঞেস করলেও, কুমারসন কারও কাছে মুখ খোলেননি বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু দিন কয়েক পর আচমকাই রক্তবমি শুরু হয় তাঁর। তড়িঘড়ি সুরানডাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হলে পরে তিরুনেলভেলি হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৫ দিন ভর্তি থাকার পর শনিবার সেখানে মারা যান কুমারসন।
আরও পড়ুন: রোম উপড়ে, মাংস খুবলে অত্যাচার থানায়, মৃত্যু বাবা-ছেলের
হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে পুলিশি অত্যাচার নিয়ে মুখ খোলেন কুমারসন। তিনি জানান, হাজতে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে পুলিশ। এ নিয়ে মুখ খুললে ফল ভাল হবে না বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এমনকি তাঁর বাবাকেও ছাড়া হবে না বলে শাসিয়েছিল পুলিশ।
তিরুনেলভেলি হাসপাতালের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ভর্তি হওয়ার সময় কুমারসনের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন মেলে। মারধরের ফলে তাঁর কিডনি এবং প্লীহা ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। শ্বাসকষ্টেও ভুগছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: করোনা নয়, ভয় অনাহারের, বিহার-উত্তরপ্রদেশ থেকে দলে দলে কাজে ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা
পুলিশি নৃশংসতার বিরুদ্ধে গত কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভ চলছে তামিলনাড়ুতে। কুমারসনের মৃত্যু সেই বিক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলেছে। রবিবার সন্ধ্যায় বীরকেরালাম্পুদুর থানার সামনে বিক্ষোভে শামিল হন কুমারসনের পরিবার, আত্মীয়স্বজন-সহ স্থানীয় মানুষজন। এই ঘটনায় এসআই চন্দ্রশেখর এবং কনস্টেবল কুমারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।