—ফাইল চিত্র।
কোভিড আবহে বিমানবন্দরের মধ্যেই দুর্নীতি ও জালিয়াতি। আর তাতে যুক্ত সরকারি আধিকারিকরাই। টাকা নিয়ে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের কোয়রান্টিন মুক্ত করে দেন তাঁরা। মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এমনই একটি চক্রের হদিশ মিলল।
এই চক্রের মূল পান্ডা দীনেশ গাওয়ান্ডে, তাঁর সহকারী আশরফ সারঙ্গ এবং বিবেক সিংহকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত হয়েছে তাঁদের। কোভিড বিধি লঙ্ঘন, প্রতারণা, জালিয়াতি, সরকারি পদের অপব্যবহার এবং মহামারি ও বিপর্যয় আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।
করোনা আবহে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের ১৪ দিনের কোয়রান্টিন বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। কিন্তু টাকার বিনিময়ে অভিযুক্তরা যাত্রীদের কোয়রান্টিন ফাঁকি দিতে সাহায্য করতেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, মাথাপিছু ৪ হাজার টাকা করে নেওয়া হত। তার বিনিময়ে তাবড় হাসপাতাল এবং প্রখ্যাত চিকিৎসকদের নামে জাল শংসাপত্র ধরানো হত তাঁদের হাতে। তাতে লেখা থাকত, বাড়িতে কোয়রান্টিন সম্পূর্ণ করেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: আপনার তথ্য সুরক্ষিত, স্টেটাস দিয়ে জানাল হোয়াটসঅ্যাপ
দীনেশ নিজে বৃহন্মুম্বই পুরসভার কর্মী। গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে বিমানবন্দরে মোতায়েন তিনি। ৬ নম্বর পার্কিংয়ে দুবাই, কুয়েত এবং আমেরিকা থেকে আসা যাত্রীদের পরীক্ষা করা তাঁর দায়িত্ব ছিল। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে, বিমানবন্দরেরই শুল্কমুক্ত দোকানের দুই কর্মী আশরফ এবং বিবেকের সাহায্যে তিনি বেআইনি কাজকর্ম চালাতেন বলে জানা গিয়েছে।
দীনেশের কাছ থেকে নগদ ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, সৌদি আরবের ২০০ রিয়ালস এবং হোম কোয়রান্টিনের একটি নকল রবার স্ট্যাম্প উদ্ধার হয়েছে। বহু লেটারহেড উদ্ধার হয়েছে, যাতে টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতাল, এশিয়ান হার্ট ইনস্টিটিউট এবং কেয়ার মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসকদের ভুয়ো স্বাক্ষর ও স্ট্যাম্প বসানো রয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, দীনেশ যে এই কাজ করেন, তা কেউ জানতেই পারেনি। কিন্তু শুক্রবার ভোরে নিজেই বিপত্তি ঘটিয়ে বসেন তিনি। বিমানবন্দরের শৌচাগারে নিজের ব্যাগ ফেলে গিয়েছিলেন দীনেশ। কিছু দূর গিয়ে মনে পড়ায় এক মহিলা হাউসকিপিং কর্মীকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে শৌচাগার থেকে ব্যাগ আনতে যান তিনি। ভোর পৌনে ৬টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে বিমানবন্দরে সিআইএসএফ-এর কাছে অভিযোগ জানান ওই মহিলা। তাতেই তল্লাশি নিতে গিয়ে দীনেশের ব্যাগ থেকে ওই সমস্ত জিনিস বেরিয়ে পড়ে। পরে জেরায় অপরাধ স্বীকার করে নেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘সম্মান’ প্রকল্পের মাঝেই মধ্যপ্রদেশে ৩ দফায় গণধর্ষণ ১৩ বছরের কিশোরীকে
বিদেশ ফেরত যে সমস্ত যাত্রীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন দীনেশ, তাঁদের মধ্যে অন্ধেরি ওয়েস্টের জাভিদ নবাব, মালাড ওয়েস্টের শেখ শাকিল সেলিম, খান আরবাস সত্তার, নেরুল ইস্টের হ্যারি রিও জন এবং নাসিকের শেখ শাকির এবং সাকুরকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। দোষী সাব্যস্ত হলে ৭ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে দীনেশের।