ডাক্তারি না পড়েও ডাক্তার! —প্রতীকী চিত্র।
কখনও ডাক্তারি পড়েননি। অথচ ঝুলিতে রয়েছে ডাক্তারি শংসাপত্র। নামের আগে চিকিৎসক লেখার ছাড়পত্র পেয়েছেন এমন ২৭৮ জন। মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কেকে ত্রিবেদীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিটির তদন্ত রিপোর্টে উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মধ্যপ্রদেশের মেডিক্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুয়ো পড়ুয়াদের ডাক্তারি শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগে ২০২১ সালের ১৬ অগস্ট দায়ের হয় মামলা। হাই কোর্টে কয়েক জন ডাক্তারি পড়ুয়া তাঁদের পিটিশনে দাবি করেন, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজে বড় রকম দুর্নীতি এবং অনিয়ম হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, ২০১৮-’১৯ সালের ডাক্তারি পরীক্ষায় বিশাল গোলযোগ আছে। যেমন, পড়ুয়া নন, এমন অনেকেই ডাক্তারি শংসাপত্র পেয়েছেন।
মধ্যপ্রদেশে সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ৯৫৪টি মেডিক্যাল, নার্সিং এবং প্যারা মেডিক্যাল কলেজ আছে। সেখানে এমন গুরুতর অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি মহম্মদ রফিক এবং বিচারপতি বিশাল ঢগতের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে তৈরি হয় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটি।
এই কমিটি বিভিন্ন মেডিক্যাল এবং প্যারা মেডিক্যাল কলেজের ৭ অভিযোগকারীর অভিযোগ খতিয়ে দেখে। গত জুলাই মাসেই তদন্ত রিপোর্ট হাই কোর্টে জমা দেয় এই কমিটি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি।
এর মধ্যে একটি সংবাদমাধ্যম ওই রিপোর্টের একটি কপি পেয়েছে বলে দাবি করেছে। তাদের দাবি, এমন ২৭৮টি কেস দেখা গিয়েছে, যেখানে যাঁরা ডাক্তারি পড়তে ঢুকেছেন এবং যাঁরা ডাক্তারি শংসাপত্র পেয়েছেন, তাঁরা আলাদা! এমনকি, এক রোল নম্বরে অন্য নামধারীরা ডাক্তারি ডিগ্রি হাতে পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের একটি অংশের দুর্নীতি স্পষ্ট বলে বলা হয়েছে ওই রিপোর্টে। কমিটির রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে ওই সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ২০১৮-’১৯ শিক্ষাবর্ষে এনআরআই বা অনাবাসী কোটায় ১৩ জন এমবিবিএস এবং বিডিএস পড়তে ঢোকেন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। কিন্তু পরে ‘বিশেষ পুনর্মূল্যায়নে তাঁদের নম্বর বেড়ে যায় এবং তাঁরা ডাক্তার হয়ে যান।
মধ্যপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী (মেডিক্যাল) বিশ্বাস সারং এই রিপোর্ট প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আমরা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আদালতের নির্দেশ এলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”