ছবি: পিটিআই
কৃষক সংগঠনগুলির ডাকা ভারত বন্ধের প্রভাব কিছু রাজ্যে পড়লেও মোটের উপর স্বাভাবিক রয়েছে জনজীবন। বন্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছ দিল্লি, হরিয়ানা, পঞ্জাব ও কেরলে। সোমবার সকালে দিল্লি-মেরঠ জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন কৃষি আইন নিয়ে প্রতিবাদী কৃষকরা। সেখানে কিছুটা ব্যাহত হয় যান চলাচল। তবে দিল্লি সীমান্তে গুরুগ্রাম ও নয়ডায় বিপুল যানজটের পরিস্থিতি তৈরি হয় পুলিশের কড়া নজরদারির ফলে। রাজধানীতে ঢোকার আগে রীতিমতো তল্লাশি করে গাড়ি ছাড়া হচ্ছিল দিল্লির সীমান্তে। সেই কারণেই যানজট শুরু হয়। প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে গাড়ির লাইন পড়ে যায়। বন্ধ সমর্থকদের আটকাতে গিয়ে দিল্লির সীমান্ত যানজটে আটকে ফেলে পুলিশই।
পঞ্জাবে সরাসরি কৃষকদের সমর্থনে পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস। বেশ কয়েকটি স্থানে রাস্তা বন্ধ করে প্রতিবাদ করেছেন কৃষকরা। বন্ধকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী থেকে শুরু করে নভজ্যোত সিংহ সিধু ও পঞ্জাবের অন্য নেতারা। ফলে সে রাজ্যে মোটের উপর দেখা গিয়েছে বন্ধের স্পষ্ট প্রভাব। অন্য দিকে কেরলে বন্ধ সমর্থন করেছে ইউডিএফ ও এলডিএফ, দু’টি জোটই। ফলে কার্যত ফাঁকা হয়ে গিয়েছে কেরলের রাস্তা। মুম্বইয়ের রাস্তাতেও বন্ধ সফল করে একযোগে বাম ও কংগ্রেস সমর্থকরা নেমেছেন। সেখানে কৃষক সংগঠনের সদস্য সমর্থকরাও প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। মুম্বইয়ের বেশির ভাগ দোকান-বাজারই বন্ধ। তবে গোলমালের কোনও খবর মেলেনি।
তবে পুলিশ ও জনতা খণ্ডযুদ্ধে উত্তাল হয়েছে চেন্নাই। তামিলনাড়ুর বাম সংগঠনের নেতৃত্ব ও সমর্থকরা চেন্নাইয়ের আন্না সলাই এলাকায় পুলিশে ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় সোমবার সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ বন্ধ সমর্থকদের আটক করে। ওড়িশায় একই ভাবে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে নির্মাণ শ্রমিক সংঘ। ভূবনেশ্বরের বেশ কয়েকটি রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে সংগঠনের তরফ থেকে।
ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েত টুইট করে সাধারণ মানুষের অসুবিধার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন সোমবার সকালেই। তিনি লিখেছেন, ‘দেশ জুড়ে ভারত বন্ধে মানুষের সমর্থন পাওয়া গিয়েছে। সাধারণ মানুষ যে সমস্যায় পড়েছেন, তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু মনে রাখবেন কৃষকরা গত ১০ মাস ধরে সমস্যায় আছে।’’ জাতীয় স্তরে সরাসরি কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে টুইট করেছেন এসপি নেতা অখিলেশ যাদব ও বিএসপি নেতা মায়াবতী।
ট্রেন যাত্রা নিয়েও বেশ কিছু সমস্যার খবর এসেছে। অম্বালা, ফিরোজপুরের মধ্যে মোট ২৫ ট্রেনের যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রেল জানিয়েছে, দিল্লি শাখায় মোট ২০টি আলাদা আলাদা স্থানে রেল অবরোধের খবর মিলেছে। ইতিমধ্যে দিল্লি থেকে পঞ্জাবগামী বেশ কয়েকটি দুরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।