বাজপেয়ী-আডবাণী যুগ থেকে মোদী জমানা। অনেক ওঠাপড়া বিজেপি-র। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বুধবার ৬ এপ্রিল বিজেপি-র ৪৩তম প্রতিষ্ঠা দিবস। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি জেপি নড্ডা নির্দেশ দিয়েছেন, বুধবার থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা-সপ্তাহ পালন করবে দল। রাজ্যে রাজ্যে নানা কর্মসূচির পাশাপাশি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। তবে এ বার বিজেপি নেতারা প্রতিষ্ঠা দিবস পালনে বাড়তি উৎসাহী। সেই উৎসাহ তৈরি করে দিয়েছে পাঁচ রাজ্যের সাম্প্রতিক নির্বাচনী ফল। চারটিতে ক্ষমতায় আসা তো আছেই সেই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে পর পর দু’বার। বুধবার দেশজুড়ে দলীয় কর্মী, সমর্থকদের উদ্দেশে মোদীর বক্তৃতায় উঠে আসতে পারে সেই সাফল্য গাঁথা।
১৯৮০ সালে জন্ম নেওয়া বিজেপি-র উত্থান রাতারাতি হয়নি। অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণীদের লড়াই ছিল দীর্ঘ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, সেই সময়ে তৈরি হওয়া ভিতের উপরে দাঁড়িয়েই আজ বড় শক্তি নিয়ে কেন্দ্রের ক্ষমতায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। দেশের ১৮টি রাজ্যে একা অথবা জোট গড়ে সরকার চালাচ্ছে বিজেপি।
এই পথ চলায় বিজেপি-র ব্যর্থতার নজিরও কম নয়। ১৯৮৪ সালে মাত্র দু’টি আসন পেয়ে থমকাতে হয়েছিল পদ্মশিবিরকে। আবার পর পর দু’বার জোট গড়ে ক্ষমতায় এসেও তারা পূর্ণ সময় টেকাতে পারেনি সরকার। প্রথমবার ১৩ দিন ও দ্বিতীয়বার ১৩ মাসের মাথায় পড়ে গিয়েছে বাজপেয়ী সরকার। পরে অবশ্য পাঁচ বছর সরকার চালানোর সাফল্যও দেখেছে। কিন্তু তার পরে আবার টানা ১০ বছর ক্ষমতা থেকে দূরে থাকতে হয়েছে বিজেপি-কে। ২০১৪ সালের পরে যে ছবি আবার বদলেছে। যদিও অনেক স্বপ্নই সফল করতে পারেননি নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। অনেকদিন ধরেই দল চেয়েছে প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাংলায় ক্ষমতা দখল। কিন্তু সে স্বপ্নপূরণ হয়নি। এ রাজ্যে বিরোধী দল হয়ে বিজেপি-কে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হয়েছে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
শুধু সাফল্যেই নয়, সম্পদের খতিয়ানেও এগোতে এগোতে দেশের সেরা হয়েছে বিজেপি। তবে উল্কার গতিতে উত্থানটা হয়েছে ২০১৪ সালের পর থেকেই। সর্বশেষ প্রাপ্ত হিসেব বলছে, দেশের সব জাতীয় ও আঞ্চলিক দলের মোট সম্পদের ৭০ শতাংশই বিজেপি-র দখলে। সম্প্রতি অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেশের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির সম্পদের হিসেব পেশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের হিসেবে বিজেপি-র মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৮৪৭.৭৮ কোটি (৬৯.৩৭ শতাংশ) টাকা। এর পরে রয়েছে বহুজন সমাজ পার্টি। মায়বতীর দলের মোট ঘোষিত সম্পদ ৬৯৮.৩৩ কোটি (৯.৯৯ শতাংশ) এবং তৃতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেসের ৫৮৮.১৬ কোটি (৮.৪২) কোটি টাকা।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
এ তো গেল জাতীয় দলের হিসেব। আঞ্চলিক দলগুলির হিসেবে সবার উপরে সমাজবাদী পার্টি। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের হিসেবে ৪৪টি আঞ্চলিক দলের মধ্যে প্রথম ১০টির হাতেই রয়েছে ৯৫.২৭ শতাংশ অর্থ। অখিলেশ যাদবের দলের ঘোষিত সম্পদ ৫৬৩.৪৭ কোটি টাকা। দ্বিতীয় তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির সম্পদ ৩০১.৪৭ কোটি টাকা এবং এডিএমকে-র সম্পদ ২৬৭.৬১ কোটি টাকা।