গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে ভারতকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলল আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)। তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে কয়েকটি নীতি বদল বা সেগুলির কিছুটা সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। বিশ্বের এগিয়ে থাকা অর্থনীতির কয়েকটি দেশের অন্যতম হয়ে ওঠার পর ভারতের এই মন্দায় যথেষ্টই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইএমএফ।
আইএমএফ-এর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত রনিল সালগাডো বলেছেন, ‘‘ভারতে আক্ষরিক অর্থেই অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। যা যথেষ্টই উদ্বেগজনক। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে দ্রুত কয়েকটি ব্যবস্থা নিতে হবে ভারতকে। কয়েকটি নীতির বদল ঘটাতে হবে বা সেগুলিকে কিছুটা সংশোধন করতে হবে।’’
এই মন্দার কারণগুলি কী কী, তারও উল্লেখ করা হয়েছে আইএমএফ-এর বার্ষিক রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, ভারতের বাজারে পণ্যাদি বিক্রির পরিমাণ কমেছে। কমেছে পুঁজি বিনিয়োগ। একই সঙ্গে কমেছে কর আদায়ের মাধ্য়মে রাজস্বের পরিমাণও। মন্দা চললে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই)-কে ঋণের উপর আদায় করা সুদের হারে কোপ বসাতেই হবে। যা অর্থনীতির স্বস্থ্যের পক্ষে মোটেই সুলক্ষণ নয়। আরবিআই ইতিমধ্যেই যে হার কমিয়েছে পাঁচ বার।
তিন বছর আগে যিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন, সেই আইএমএফ-এর ইকনমিক কাউন্সেলর ও গবেষণা বিভাগের অধিকর্তা গীতা গোপীনাথও ভারতের অর্থনৈতিক মন্দার জন্য দায়ী করেছেন পরিচালনব্যবস্থার গাফিলতিকে। সোমবার সকালে গীতা দিল্লিতে দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। তাঁর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করলেন আইএমএফের তরফে গীতা গোপীনাথ। দিল্লিতে, সোমবার। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
গত শুক্রবারই গীতা বলেছিলেন, ‘‘আমার মনে হচ্ছে, এই অর্থনৈতিক মন্দার জন্য পরিচালনগত গাফিলতি, অনিশ্চয়তা একটা বড় ভূমিকা নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে এ বার এই পরিচালনগত অনিশ্চয়তার বিষয়টি নিয়েও ভাবতে হবে।’’
খবর, দেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণগুলি নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে গীতার। কী কী কারণে এই অর্থনৈতিক মন্দা, সেগুলি তিনি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। শুনেছেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য।
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রের খবর, কী ভাবে দ্রুত সেই মন্দার গ্রাস থেকে দেশ বেরিয়ে আসতে পারে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে সে কথাও জানিয়েছেন।
গীতার বক্তব্য, ‘‘অর্থনৈতিক সংস্কারের পথেই ভারতকে এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু তার জন্য আরও বেশি স্বচ্ছতা আরও বেশি নিশ্চয়তার প্রয়োজন। না হলে অর্থনৈতিক সংস্কার সার্বিক ভাবে সফল হবে না।’’