ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি) বিল নিয়ে চিকিৎসক সংগঠনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের টানাপড়েনে আজ, বুধবার রোগী দুর্ভোগের সম্ভাবনা তৈরি হল।
জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি) বিলের প্রতিবাদে আগামিকাল সকাল ছ’টা থেকে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। জরুরি নয়, শুধু এমন পরিষেবা (নন এসেনসিয়াল সার্ভিস)-ই বন্ধ রাখার কথা বলেছে তারা। সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠনটি আজ এক বিবৃতিতে বলেছে, জরুরি বিভাগ, ক্যাজুয়াল্টি বিভাগ, আইসিইউ এবং সেই সম্পর্কিত পরিষেবায় কর্মবিরতির আঁচ পড়বে না। ‘নন
এসেনসিয়াল সার্ভিসে’র মধ্যে বর্হির্বিভাগও পড়ে। এখানেই সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে রোগী ভোগান্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে বর্হির্বিভাগ বন্ধ রাখা যায় না। রোগী পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে।’’
দেশে চিকিৎসক ও চিকিৎসা-পড়ুয়াদের সর্ববৃহৎ সংগঠন আইএমএ। সদস্যের সংখ্যা তিন লক্ষের কাছাকাছি। আগামিকাল সারা দেশেই আইএমএ সদস্যেরা বিক্ষোভ দেখাবেন। করবেন অনশনও। ডাক্তারি ছাত্রদের ক্লাস বয়কট করারও ডাক দিয়েছে সংগঠনটি। পশ্চিমবঙ্গে আইএমএ-র অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম, অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরস এবং সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের মতো চিকিৎসক সংগঠনগুলি। স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, সরকারি হাসপাতালে বেশির ভাগ রোগী গ্রামগঞ্জের বাসিন্দা। হাসপাতালে পৌঁছে বর্হির্বিভাগে পরিষেবা না পেলে তাঁরা সমস্যায় পড়বেন।
আইএমএ-র জাতীয় সভাপতি শান্তনু সেন বলেন, ‘‘কারও অসুবিধা হলে ব্যক্তিগত ভাবে আগাম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু রোগী ও চিকিৎসা পরিষেবার বৃহত্তর স্বার্থেই এই ধরনের প্রতিবাদ করা ছাড়া রাস্তা নেই।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই বিল চিকিৎসা পরিষেবাকে কর্পোরেট সেক্টরের হাতে তুলে দিতে চাইছে। অর্থের অভাবে কোনও গরিব ঘরের ছেলে আর ডাক্তার হতে পারবেন না। ‘ন্যাশনাল এগজিট টেস্ট বা নেক্সট’-এর প্রস্তাব বিভ্রান্তিকর। বিদেশ থেকে এমবিবিএস করলে বিশেষ সুবিধা
দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিলে গ্রামীণ চিকিৎসাকে হাতুড়ে ডাক্তারদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এটা কোনও ভাবে মেনে নেওয়া যায় না।’’
আইএমএ-র জাতীয় সভাপতির মতে, ‘‘এই বিল শুধু জনবিরোধী ও গরিব-বিরোধী নয়, এটি ছাত্র-বিরোধী, অগণতান্ত্রিক ও দানবীয়।’’ আগামিকাল দেশ জুড়ে কর্মবিরতির পরেও সরকার যদি তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলি নিয়ে উদাসীন থাকে, তবে আইএমএ আরও বড় আন্দোলনে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।