আত্মহত্যা রুখতে ফ্যান খোলা হচ্ছে! প্রতীকি ছবি।
রাজার পায়ে ধুলো লাগা ঠেকাতে গোটা নগর পুরু চামড়ায় মুড়িয়ে দেওয়ার ফন্দি আঁটা হয়েছিল ‘জুতা আবিষ্কার’ কবিতায়। এ বার পড়ুয়াদের আত্মহত্যা রুখতে হস্টেল থেকে সিলিং ফ্যান খুলে নিল বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অব সায়েন্সেস (আইআইএসসি)! এহ বাহ্য, সরু বারান্দা কিংবা ছাদে যাওয়াও এ বার থেকে নিষিদ্ধ হতে চলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এমনই দাবি করেছেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পড়ুয়া। কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন এমন পদক্ষেপ?
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার প্রবণতায় রাশ টানতেই এই সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষের।
বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অব সায়েন্সেস-এর দুনিয়াজোড়া সুনাম। বিভিন্ন সংস্থার ক্রমতালিকায় দেশে প্রথম সারিতেই তার নাম। এ হেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা যাতে আত্মহত্যা করতে না পারেন, সে জন্য হস্টেলে পড়ুয়াদের ঘর থেকে সিলিং ফ্যান খুলে এমন ফ্যান লাগানো চলছে, যা থেকে ঝুলে পড়া কার্যত অসম্ভব। একটি সূত্রের দাবি, এ বছর আইআইএসসি-র ক্যাম্পাসে চার পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছেন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল দুই। তাই পড়ুয়াদের ঘর থেকে সিলিং ফ্যান খোলার ‘বৈপ্লবিক’ সিদ্ধান্ত। ১৫ দিনের মধ্যেই ফ্যান সরানোর কাজ শেষও হয়ে যাবে বলে খবর।
কী বলছেন পড়ুয়ারা? এ নিয়ে একটি অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় প্রকাশ, শতকরা ৮৮ শতাংশ পড়ুয়াই মনে করেন, সিলিং ফ্যান খুলে অন্য ফ্যান লাগালেই সমস্যার সমাধান হবে না। ৯০ শতাংশ পড়ুয়া বলছেন, এর কোনও প্রয়োজনই ছিল না। আর ৬ শতাংশ পড়ুয়া মনে করেন, এই পরিবর্তনে তাঁদের কিছু যায় আসে না।
আইআইএসসি-এর পড়ুয়াদের মানসিক চাপ কমাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই রয়েছে ‘ওয়েলনেস সেন্টার’। তা আদতে নখদন্তহীন হয়ে পড়েছে বলে পড়ুয়াদের মত। তবে কেন্দ্রটির উন্নয়নের কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু খ্যাতনামা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা রুখতে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যোদ্ধার কিংবা শিক্ষক-পড়ুয়া কথোপকথনের পথে না গিয়ে সিলিং ফ্যান কেন খুলতে হচ্ছে, সেই প্রশ্নের এখনও উত্তর মেলেনি।