দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। ফাইল ছবি।
বাড়ির চৌকাঠে যদি পিৎজা এসে হাজির হতে পারে, তবে রেশন কেন একই ভাবে পৌঁছে দেওয়া যাবে না? কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। সরকারের কাছে তাঁর আর্জি, ‘‘হাত জোর করছি, আমাকে ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছে দেওয়ার অনুমতি দিন।’’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কেজরীবালও দিল্লিবাসীর দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। সোমবার থেকে চালু হওয়ারও কথা ছিল সেই প্রকল্পটির। কিন্তু তার ঠিক দু’দিন আগে ওই প্রকল্প কেন্দ্রের তরফে বন্ধ করতে বলা হয়। কেজরীবাল জানতে চেয়েছেন, ‘‘দিল্লিতে ঘরে ঘরে রেশন প্রকল্প চালু হওয়ার ঠিক দু’দিন আগে ওই প্রকল্প বন্ধ করে দিল কেন্দ্র। যদি করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ির দরজায় পিৎজা পৌঁছে দেওয়া যায়, তবে রেশন নয় কেন?’’
দিল্লি সরকারের এই পরিকল্পনায় লক্ষ লক্ষ গরিব এবং নিম্নবর্গীয় দিল্লিবাসী উপকৃত হতে পারতেন জানিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন, কোন যুক্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পটিকে বন্ধ করেছে। কেজরীবাল বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রকে করজোড়ে আমার আবেদন, দয়া করে আমাদের ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছে দেওয়ার অনুমতি দিন।’’
‘মুখ্যমন্ত্রী ঘর ঘর রেশন যোজনা’ নামে ওই প্রকল্পে দিল্লির ৭২ লক্ষ রেশন কার্ডের ধারককে চাল ও আটা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল আম আদমি পার্টি সরকার। কেন্দ্রের দাবি, এই প্রকল্প চালু করার জন্য কেন্দ্রের অনুমতি নেওয়া হয়নি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের সেই অভিযোগও খারিজ করেছেন। রবিবার কেজরীবাল বলেন, ‘‘আইনত দিল্লি সরকার এই ধরনের প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের অনুমতি নিতে বাধ্য নয়। তবু সৌজন্য দেখাতেই আমরা কেন্দ্রের অনুমতি নিয়েছিলাম। তা-ও এক বার নয়, পাঁচ বার।’’ কেজরীবালের দাবি, তার পরও কেন্দ্র যে দিল্লির দুয়ারে রেশন প্রকল্প বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার কারণ রেশন মাফিয়ারা। তাদেরই কথাতেই কেন্দ্র দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প বন্ধ করার পদক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।
কেজরীবাল সম্প্রতি জানান, ৭২ লক্ষ মানুষ প্রতি মাসেই ভর্তুকি-সহ ৫ কেজি রেশন পাবেন। কেন্দ্র সেই প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ায় রবিবার কেজরীবাল বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে রেশনের দোকানগুলিতে ভিড় হওয়ায়, ওই দোকানগুলি সংক্রমণ ছড়ানোর কেন্দ্র হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে ভিড় এড়িয়ে, সংক্রমণ বাঁচিয়ে দিল্লিবাসীকে রেশন তুলতে সাহায্য করত এই প্রকল্প। কিন্তু কেন্দ্র তা বন্ধ করে দেওয়ায় ৭২ লক্ষ দিল্লিবাসী সমস্যায় পড়বেন।