বিজেপি হারলে তবেই মূল্যবৃদ্ধি কমবে! ত্রিপুরার প্রচারে নয়া 'ব্যস্তানুপাত' ব্যাখ্যা অভিষেকের। ফাইল চিত্র।
ত্রিপুরায় ভোটপ্রচারে গিয়ে আরও এক বার রাজ্যের বিজেপি সরকারকে নিশানা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির পরাজয়ের সঙ্গে এ বার মূল্যবৃদ্ধির সম্পর্ক টানলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরার কমলপুরে প্রচারে গিয়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, “বিজেপিকে হারান, দেখবেন মূল্যবৃদ্ধি কমে গিয়েছে।” নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে হারার পরেই ত্রিপুরায় পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমিয়ে দিয়েছিল বিজেপি সরকার।
অভিষেক এ-ও দাবি করেন যে, রাজ্যে সিপিএম, কংগ্রেস কিংবা তিপ্রা মথার মতো বিরোধী দল থাকা সত্ত্বেও শুধু তৃণমূলের চাপের সামনে নত হয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে বদল করতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি। গত ৭ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আগরতলায় ভোটপ্রচারে এসেও অভিষেক একই দাবি করেছিলেন। ২০১৭ সালে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বামফ্রন্টকে হারিয়ে সরকার গড়ে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হন বিপ্লব দেব। ২০২২ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করা হয় মানিক সাহাকে। নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে একাধিক বার সংবাদ শিরোনামে আসা বিপ্লবকে বিজেপি বাধ্য হয়েই সরিয়ে দিল কি না, তা নিয়ে সে সময় প্রশ্ন উঠেছিল। অভিষেক সে দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবার ত্রিপুরার কমলপুরে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে ভোটপ্রচারে এসে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ মঞ্চের সামনে বসে থাকা জনতার উদ্দেশে জোড়াফুল প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। এর পাশাপাশি, বাংলার সঙ্গে ত্রিপুরার তুলনাও টানেন তিনি। খাদ্য, পোশাক, ভাষা দুই রাজ্যের মিল তুলে ধরার সঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলা এখন কত এগিয়ে গিয়েছে, আর বিজেপি শাসনে পিছিয়ে গিয়েছে ত্রিপুরা।” তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গের মতোই সে রাজ্য কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্প চালু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। রাজ্যে ‘নতুন ভোর’ আসছে বলেও দাবি করেছেন অভিষেক।
আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। ফলপ্রকাশ ২ মার্চ। এই প্রথম ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোটে লড়ছে তৃণমূল। তবে এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে আগরতলায় পুরভোটেও লড়েছিল তৃণমূল। খাতা খুলতে পারেনি। ৫১টি আসনেই জিতেছিল বিজেপি। তবে প্রথম বার লড়ে নিজেদের ‘ছাপ’ রাখতে সমর্থ হয়েছিল তৃণমূল। ৫১টির মধ্যে ১৬টি ওয়ার্ডে তৃণমূল এবং সিপিএম মিলিত ভাবে বিজেপির থেকে বেশি ভোট পেয়েছিল। যা থেকে মনে করা হয়, সিপিএম-তৃণমূলের ভোট ভাগাভাগিতেই বাড়তি সুবিধা পেয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল অভিযোগ করেছিল, সন্ত্রাস ছড়িয়েই ভোটে জয় পেয়েছে বিজেপি। যদিও সেই পরিস্থিতি এখন অনেকটাই বদলেছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল। ত্রিপুরায় যে তাঁরা মাটি কামড়ে পড়ে থাকবেন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন অভিষেকও। বাংলায় কেমন উন্নয়ন হয়েছে, তা যাচাই করতে ত্রিপুরার মানুষদের সে রাজ্যে যাওয়ার কিংবা আত্মীয়স্বজনদের ফোন করে খোঁজখবর নেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।