চিনের সঙ্গে টক্কর তিন মাসেই, দাবি অরূপের

বাংলার মাটি থেকেই আর মাত্র তিন মাস পরে বায়ুসেনা চিনকে টক্কর দেবে বলে জানিয়ে দিলেন বাঙালি বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অরূপ রাহা। অবসরের ঠিক আগে অরূপবাবু আজ বলেন, ‘‘আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যেই পানাগড়ে সি১৩০জে সুপার হারকিউলিস বিমানের দ্বিতীয় স্কোয়াড্রন কাজ শুরু করে দেবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:২৫
Share:

উত্তরসূরি বি এস ধানোয়ার (ডান দিকে) সঙ্গে অরূপ রাহা। বুধবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

বাংলার মাটি থেকেই আর মাত্র তিন মাস পরে বায়ুসেনা চিনকে টক্কর দেবে বলে জানিয়ে দিলেন বাঙালি বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অরূপ রাহা। অবসরের ঠিক আগে অরূপবাবু আজ বলেন, ‘‘আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যেই পানাগড়ে সি১৩০জে সুপার হারকিউলিস বিমানের দ্বিতীয় স্কোয়াড্রন কাজ শুরু করে দেবে।’’

Advertisement

পূর্ব ভারত এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে চিনা বিপদের কথা ভেবেই সেনাবাহিনী ‘মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর’ তৈরি করছে। সীমান্ত রক্ষার বদলে পাল্টা আক্রমণ চালানোই হবে যার কাজ। বর্ধমানে পানাগড়ের সেনা ছাউনিতেই তার সদর দফতর হবে।
সেই বাহিনী ও তার সমরাস্ত্রকে দ্রুত চিনের সীমান্তবর্তী পার্বত্য এলাকায় পৌঁছে দিতেই পানাগড়ের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হারকিউলিস বিমানের প্রয়োজন। কারণ, হারকিউলিস বিমান দুর্গম পার্বত্য এলাকায় উড়তে বা এবড়ো-খেবড়ো রানওয়েতে ওঠানামা করতে পারে।

গত কালই বোঝা গিয়েছে ভারতের প্রস্তুতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বেজিং। অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের পরে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চিনা বিদেশ মন্ত্রক। ওই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য চিন কি না, তা দিল্লির কাছে জানতে চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। চিনের প্রতিক্রিয়ার জবাবও দিয়েছে ভারত। ৫ হাজার কিলোমিটার পাল্লার অগ্নি-৫ চিনের যে কোনও এলাকায় আঘাত হানতে পারে।

Advertisement

চিনের প্রতিক্রিয়া উড়িয়ে বিদায়ী বায়ুসেনা প্রধানের বক্তব্য, ‘‘পরমাণু অস্ত্রসম্ভার বাড়ানোর মতো নিষিদ্ধ কাজ ছাড়া অন্য দেশের প্রস্তুতি নিয়ে প্রতিক্রিয়াও জানানো উচিত নয়।’’ প্রযুক্তি হস্তান্তরের উপরে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে পাকিস্তানকে বার বার
সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে চিনের বিরুদ্ধে। সে দিকে ইঙ্গিত করে অরূপবাবুর বক্তব্য, ‘‘যোগসাজশ বা নিষিদ্ধ প্রযুক্তি দিয়ে সাহায্য করার ক্ষেত্রে এই অঞ্চলে কী হচ্ছে তা
সবাই জানেন!’’

তিন সামরিক বাহিনীর প্রধানের মধ্যে প্রবীণতম হিসেবে অরূপবাবু চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান পদেও ছিলেন। চিনের নাম না করলেও অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্র এবং পানাগড়ে হারকিউলিস বিমানের
ঘাঁটি তৈরি করার পিছনে কারণও সাফ করে দিয়েছেন তিনি। বিদায়ী বায়ুসেনা প্রধানের কথায়, ‘‘আমাদের চেয়ে যে শক্তিশালী, তার মোকাবিলা কী ভাবে করব? সে ক্ষেত্রে শত্রু রাষ্ট্রের একেবারে গভীরে হানা দেওয়ার ক্ষমতা তৈরি করতে হবে। সঠিক নিশানায় হামলা চালাতে হবে।’’

সামরিক ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদী হামলা রোখার জন্যও বায়ুসেনা এখন অনেক বেশি তৈরি বলে অরূপবাবুর দাবি। তাঁর আমলেই পঠানকোটে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলা হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল বায়ুসেনা ঘাঁটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।

অবসরের আগে আজ অরূপবাবু স্বীকার করেছেন, পঠানকোটের হামলা এবং বঙ্গোপসাগরে এএন-৩২ বিমান নিখোঁজ হয়ে যাওয়া তাঁর আমলের সবচেয়ে খারাপ সময়। অরূপবাবুর দাবি, ‘‘আমরা পঠানকোটের হামলা থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আর এনএন-৩২-তে জলের তলায় ধ্বংসস্তূপ চিহ্নিত করার যন্ত্র ছিল না। সব বিমানে এই যন্ত্র লাগানোর জন্য সরকারকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। নিখোঁজ বিমানের সন্ধানের জন্য বিদেশি সংস্থার সাহায্য চাইতেও সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement