শ্রীনগরের কাছে বদগামে ভেঙে পড়া বায়ুসেনার সেই হেলিকপ্টার। ফাইল চিত্র
বালাকোট অভিযানের পরের দিন পাক যুদ্ধবিমানের সঙ্গে যখন লড়াই চলছে, তখন ভারতীয় বায়ুসেনা নিজেদের একটি হেলিকপ্টার নিজেরাই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে উড়িয়ে দিয়েছিল। সরকারি ভাবে আজ প্রথম এই কথা স্বীকার করলেন বায়ুসেনার নতুন প্রধান রাকেশ কুমার সিংহ ভদৌরিয়া। কপ্টার ধ্বংসকে ‘মস্ত ভুল’ বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, এই ঘটনায় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে দুই বায়ুসেনা অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে জঙ্গি হামলার পরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনা অভিযান চালায়। আসন্ন বায়ুসেনা দিবস উপলক্ষে আজ সাংবাদিক বৈঠকে বালাকোট অভিযানের ভিত্তিতে তৈরি একটি ভিডিয়ো দেখানো হয়। দেখা যায়, মিরাজ উড়ে যাচ্ছে। জঙ্গি-শিবিরকে রেডারে নিশানা করা হচ্ছে, গুঁড়িয়ে যাচ্ছে ঘাঁটি। কোনওটিই অবশ্য আসল অভিযানের ফুটেজ নয়।
ভারত বালাকোটের জঙ্গি শিবির ধ্বংস করার কথা বললেও পাকিস্তান তা অস্বীকার করে। ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে পাক বায়ুসেনা এফ-১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার মধ্যে থেকেই ভারতের সেনা ঘাঁটিতে হামলার চেষ্টা করে। জবাব দিতে ওড়ে ভারতের যুদ্ধবিমানও। যার মধ্যে একটি মিগ-২১ বাইসনে ছিলেন অভিনন্দন বর্তমান।
আকাশে যখন দু’দেশের যুদ্ধবিমানের ‘ডগফাইট’ চলছে, সেই সময়ে কাশ্মীরের বদগামে আচমকাই বায়ুসেনার একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে। কপ্টারটি একটি ‘মিশন’ থেকে ফিরছিল। কপ্টারে থাকা ছয় বায়ুসেনা কর্মীর সঙ্গে স্থানীয় এক বাসিন্দারও মৃত্যু হয়। বায়ুসেনা সূত্রে জানা গিয়েছিল, কপ্টারটি ভেঙে পড়ার আগে ‘স্পাইডার এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম’ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল। তদন্তে দেখা যায়, শ্রীনগরের বায়ুসেনা ঘাঁটির অফিসারদের ভুলেই এই ঘটনা ঘটে। তাঁরা ওই কপ্টারটিকে ফেরার ছাড়পত্র দিয়েছিলেন। কিন্তু তখন ‘স্পাইডার’ সক্রিয় ছিল। ভারতীয় কপ্টারকেই পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র বলে ধরে নেয় ‘স্পাইডার’।
আজ বায়ুসেনা প্রধান বলেন, ‘‘বদগাম আমাদের ভুল ছিল। কোর্ট অব এনকোয়্যারিতে স্পষ্ট, আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রই এমআই-১৭ কপ্টারে আঘাত করে। নিহতদের যুদ্ধে শহিদ বলে ধরা হবে।’’ সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক পুরনো যুদ্ধবিমান দেশের মধ্যে ভেঙে পড়েছে। বায়ুসেনা প্রধানের বক্তব্য, ‘‘শান্তির সময়েই যুদ্ধবিমান খুইয়ে ফেলাটা চিন্তার কারণ।’’