সাধারণত ছ’বছর অন্তর নতুন সুপিরিয়র জেনারেল নির্বাচিত হন। এ যাত্রা, দু’টি পর্বে এই ভূমিকায় ছিলেন সিস্টার প্রেমা। অতিমারির জন্যও নতুন সুপিরিয়র জেনারেল নির্বাচনে এক বছর দেরি হয়। এক সপ্তাহ আগে মিশনারিজ় অব চ্যারিটির শীর্ষ পদ অলঙ্কৃত করে সিস্টার মেরি জোসেফ এ দিনই প্রথম বার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
সিস্টার জোসেফ। —নিজস্ব চিত্র।
বাধা নানা রকমের। তবে মায়ের আদর্শের পথে অনড় থেকেই বাধা জয়ের প্রত্যয়ের কথা বললেন মিশনারিজ় অব চ্যারিটির নবনিযুক্ত সুপিরিয়র জেনারেল সিস্টার মেরি জোসেফ। স্বয়ং মা টেরিজ়া, সিস্টার নির্মলা এবং সিস্টার প্রেমা এই পদে গুরু দায়িত্বভার সামলেছেন। সাধারণত ছ’বছর অন্তর নতুন সুপিরিয়র জেনারেল নির্বাচিত হন। এ যাত্রা, দু’টি পর্বে এই ভূমিকায় ছিলেন সিস্টার প্রেমা। অতিমারির জন্যও নতুন সুপিরিয়র জেনারেল নির্বাচনে এক বছর দেরি হয়। এক সপ্তাহ আগে মিশনারিজ় অব চ্যারিটির শীর্ষ পদ অলঙ্কৃত করে সিস্টার মেরি জোসেফ এ দিনই প্রথম বার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
গত বছরের শেষেই মিশনারিজ় অব চ্যারিটির তহবিলে বিদেশি অনুদান গ্রহণের ছাড়পত্র কেড়ে নেয় কেন্দ্র। এখন অবশ্য সে-অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। তবু আজকের ভারতে বিভিন্ন সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান তথা গোষ্ঠীর উপরে নেমে আসা নানা সমস্যা নিয়েই এ দিন মুখ খুলেছেন সিস্টার মেরি জোসেফ। মুসলিম মেয়েদের হিজাব নিয়ে প্রভাবশালী একটি অংশের তোপ প্রসঙ্গে সিস্টার বলেন, ‘‘আমাদের কাছে সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। এবং তাঁদের অধিকারটুকু সম্মান করতেই মাদার শিখিয়েছিলেন। মুসলিম মেয়েদের হিজাবের অধিকারটুকুও আমরা সম্মান করি।’’ ৬৯ বছর বয়সী সিস্টার মেরি জোসেফ ওরফে মারিয়াম্মা পারায়িল আদতে কেরলের ত্রিশূরের মেয়ে। ১৯৭১-এ মাদারের প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি অস্ট্রেলিয়া, পাপুয়া নিউ গিনি, ফিলিপিন্স, পূর্ব ইউরোপে কাজ করেছেন। আবার কলকাতায় মাদারের ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে কাজের সুযোগও তিনি পেয়েছিলেন।
এ দিন সিস্টার জোসেফ বলেন, ‘‘মাদারের কাছে ধর্মে ধর্মে ফারাক ছিল না। এবং তিনি আমাদের মনেপ্রাণে ভারতীয় হতে বলতেন। ভারতীয় হওয়া মানে ওঁর কাছে ঈশ্বর নির্ভরতা। দুনিয়ার সবাইকে পাল্টাতে পারব না! অনেকে অনেক কিছু ভাববেন। কিন্তু মায়ের সেবার আদর্শ আমরা বহন করব।’’ আজকের ভারতে নানা ধর্মের মধ্যে সংঘাতের আবহে তাঁর দায়িত্বপালন প্রসঙ্গে সিস্টার জোসেফ বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে টেনশন হয় মায়ের কাজ ঠিকঠাক সামলাতে পারব তো! কিন্তু মায়ের পথে চলতে প্রার্থনার শক্তিতেই জোর পাই।’’ যুদ্ধের সময়ে ইউক্রেন তথা পূর্ব ইউরোপে মিশনারিজ় অব চ্যারিটি দুর্গত ও আহতদের সেবায় কাজ করছে বলে এ দিন সিস্টার জোসেফ জানিয়েছেন।