বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কৃষক সম্মেলন। ছবি: পিটিআই।
লোকসভা নির্বাচনে ভারতবাসীর রায়কে ‘নজিরবিহীন’ বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জেতার পরে প্রথম বার নিজের সংসদীয় কেন্দ্র বারাণসীতে মঙ্গলবার কৃষক সম্মেলনে মোদী বলেন, ‘‘বাবা বিশ্বনাথ, মা গঙ্গার আশীর্বাদ এবং কাশীর মানুষের ভালবাসায় আমি তৃতীয় বার দেশের ‘প্রধান সেবক’ হয়েছি।’’
ওই সভায় দেশের কৃষকদের উন্নয়নে তাঁর সরকারের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘সরকার গড়ার পরে আমরা প্রথম সিদ্ধান্ত নিয়েছি কৃষক এবং গরিবদের স্বার্থে।’’ এর পরেই তাঁর দাবি, ‘‘ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে জয়ের হ্যাটট্রিক একটি বিরল ঘটনা।’’ ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান সম্মেলন’ শীর্ষক ওই কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী দেশের ন’কোটি ২৬ লক্ষ কৃষকের ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি’র ২০ হাজার কোটি টাকার ১৭তম কিস্তি বণ্টন করেন।
বারাণসী কেন্দ্র থেকে এই নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য জিতেছেন মোদী। তবে চব্বিশের নির্বাচনে যে ব্যবধানে তিনি উত্তরপ্রদেশের বারাণসী আসনটি জিতেছেন, তা দলের অস্বস্তির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বারাণসী থেকে মোদীর জয়ের ব্যবধান এ বার এক লক্ষ ৫২ হাজার ৫১৩টি ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের অজয় রাইয়ের চেয়ে যা সাড়ে ১৩ শতাংশ বেশি। গত দু’বারের চেয়ে এই ব্যবধান বিপুল পরিমাণে কমেছে। অর্থাৎ, আগের চেয়ে অনেক কম ভোট পেয়েছেন মোদী।
২০১৪ সালে বারাণসী থেকে পাঁচ লক্ষ ৮১ হাজার ভোট পেয়েছিলেন মোদী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গে ব্যবধান ছিল তিন লক্ষ ৭০ হাজার। ২০১৯ সালে বারাণসীতে মোদীর জয়ের ব্যবধান বৃদ্ধি পায়। তিনি ওই কেন্দ্র থেকে ছ’লক্ষ ৭৪ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। সমাজবাদী পার্টির শালিনী যাদবের সঙ্গে ব্যবধান ছিল চার লক্ষ ৭৯ হাজার। গত দু’বারের তুলনায় মোদীর জয়ের ব্যবধান কমেছে অনেকটাই।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গত ৪ জুন বারাণসী কেন্দ্রে ভোট চলাকালীন এক বার অল্প ভোটের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছিলেন মোদী। পরে অবশ্য ক্রমশ ব্যবধান বাড়তে থাকে তাঁর। শেষ পর্যন্ত প্রায় দেড় লক্ষ ভোটে জয়ী হন তিনি। সেই বারাণসীকেই কৃষক সম্মেলনের জন্য বেছে নেওয়াও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। মোদী মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘একুশ শতকের ভারতে উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন কৃষকেরা।’’