ছড়িয়ে পড়ছে মারণ নেশা এলএসডি
ভয়ঙ্কর মাদক এলএসডি ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে হায়দরাবাদে। নেশায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত শহরের স্কুল ও কলেজগুলি। কমবয়সীদের মধ্যে এলএসডির মতো ভয়ঙ্কর মাদকের প্রকোপ বা়ড়ায় রীতিমতো চিন্তায় প্রশাসন। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে হায়দরাবাদের ২০টি নামী স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই নেশায় আক্রান্ত। কলেজ ছাত্ররা তো বটেই, মারণ এই নেশার কবলে পড়ছে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারাও।
আরও পড়ুন: যন্ত্রণা ভুলে ফিরতেই চান উসমান
সম্প্রতি হায়দরাবাদের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে সাত জন মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা প্রত্যেকেই শিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের যুবক। ধৃত সাত জনের মধ্যে ছ’জনই ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্র। এদের মধ্যে কেউ নামী সংস্থায় কর্মরত। পুলিশের ধারণা, এরা নিজেরাও কোনও এক সময় মাদকের ভয়ঙ্কর নেশায় আক্রান্ত হয়েছিল। এখন পাচারের কাজ করে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, কম বয়সী ক্লায়েন্টর সংখ্যাই এই মুহূর্তে বেশি। ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়া মারফত এরা পৌঁছে যাচ্ছে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের কাছে। এ ভাবেই চলছে মাদক পাচারের কাজ। মাদক আক্রান্ত এমনই এক পড়ুয়ার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করেছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। দেখা গিয়েছে, মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে ওই পড়ুয়া।
সাধারণত ব্লটিং পেপারের উপরে এই তরল মাদক ফেলে সেই কাগজ শুঁকে নেশা করা হয়। এলএসডি মাখা ছোট এক টুকরো ব্লটিং পেপারের দাম কয়েক হাজার টাকা। পাচারকারীদের কাছ থেকে যে পুড়িয়াগুলো উদ্ধার হয়েছে সেগুলোর একেকটির দাম প্রায় তিন হাজার টাকা। পুলিশ ও সরকারি আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ নামী স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাই এই মাদক চক্রের শিকার। এমনকী নেশার টাকা জোগাড় করতে বেআইনি কাজ করতেও পিছপা হচ্ছে না তারা।
তেলঙ্গানার মাদক নিয়ন্ত্রক দফতরের প্রধান আকুন সাভারওয়ালের কথায়, ‘‘স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে এই নেশার প্রবণতা খুবই চিন্তার বিষয়। মাত্র দু’দিনে হাজার জনেরও বেশি মাদক আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারাও এই মাদক কিনে ব্যবহার করছে। তাদের অভিভাবকদের এই বিষয় সচেতন করা দরকার। আমরা এখনই ওই স্কুল এবং পড়ুয়াদের নাম সামনে আনছি না। আরও অনেক তথ্য সংগ্রহ করা বাকি রয়েছে।’’ এরই সঙ্গে তিনি বলেন যে, মাদক আক্রান্তেরা যেহেতু খুবই কমবয়সী তাই এখনই তাদের বিরুদ্ধে কোনও আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে মাদক ঠেকাতে যত দ্রুত সম্ভব স্কুল ও কলেজগুলিতে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হবে।