প্রতীকী ছবি।
স্ত্রী নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করতে না পারায় রাগে, হতাশায় সম্পর্ক ছেদ করার কথা ঘোষণা করলেন স্বামী। অসমের কোকরাঝাড়ের ঘটনা। সীমান্ত শাখার পুলিশ স্ত্রী বা শ্বশুরের বিরুদ্ধে কোনও নোটিস এখনও পাঠায়নি। কিন্তু গোঁসাইগাঁওয়ের আকবর আলির দাবি, অবিলম্বে বউ আর বউয়ের পরিবারকে ডিটেনশন শিবিরে পাঠানো হোক!
আকবর আলির বক্তব্য, নিজামুদ্দিন শেখের কন্যা মর্জিনা বিবির সঙ্গে ১৩ বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। ঘটকের সূত্রে পরিচয়। নিজেদের ভারতীয় বলেই দাবি করেছিলেন শ্বশুর। কিন্তু এনআরসি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে গোল বাধে। স্ত্রী মর্জিনা ও তাঁর পরিবার নিজেদের ভারতীয়ত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হন।
অন্য ক্ষেত্রে স্বামীরা স্ত্রীর দাবির সমর্থনে লড়াই চালিয়ে যান। কিন্তু আকবর শ্বশুর ও স্ত্রীর ‘মিথ্যাচারে’ বিরক্ত। তিনি বলেন, ‘‘বাবার নাম হাজি কাসাম আলি বলে দাবি করে লিগ্যাসি ডেটা দিয়েছিলেন শ্বশুর। কিন্তু তদন্তে জানা গিয়েছে কাসেম আলি মোটেই শেখ নিজামুদ্দিনের বাবা নন। কুমারগঞ্জের আসিয়া বিবি নামে এক মহিলা কাসেম আলির লিগ্যাসি ব্যবহার করছেন। নিজামুদ্দিনও নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করতে একই লিগ্যাসি ব্যবহার করেন। এবং ব্যর্থ হন।
পণ্য পরিবহণ সংস্থায় কাজ করা আকবরের কথায়, শ্বশুর নিজামুদ্দিনের ছয় ছেলে-মেয়ে। কিন্তু তাঁরা কেউই বার্থ সার্টিফিকেট বা স্কুলের সার্টিফিকেট দিতে পারেননি। শুধুমাত্র পঞ্চায়েতের সার্টিফিকেট দিয়ে ভারতীয় হওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তিন-চার বছর ধরে নিয়ম করে শুনানিতে গিয়ে গিয়ে আমি বিরক্ত, হতাশ। আগেও সন্দেহ ছিল। এখন ভালই বুঝতে পারছি শ্বশুরবাড়ির সবাই বাংলাদেশি।’’ তাঁর দাবি, তাঁকে ঠকিয়ে বাংলাদেশের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাস দেড়েক আগে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। আকবরের বক্তব্য, ‘‘এই চাপ আমি আর নিতে পারছি না।’’
১৮ জুন শুনানিতে গিয়ে আকবর যখন নিশ্চিত হন কাসেম আলি মোটেই স্ত্রীর ঠাকুরদা নন, তখন এনআরসি সেবা কেন্দ্রেই দু’জনের ঝগড়া বাধে। তারপর থেকেই ৬ ও ৯ বছরের দুই মেয়েকে নিয়ে নিখোঁজ স্ত্রী। আকবরের দাবি, ‘‘অবিলম্বে স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি-সহ সকলকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো উচিত।’’ তবে তাঁর শ্বশুরবাড়ির কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আশঙ্কা, আকবর হল্লা করতেই তাঁরা সকলে গা-ঢাকা দিয়েছেন।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।