প্রতীকী ছবি।
পাঁচ মাস আগে এক বন্ধুর থেকে প্রথম ফোনটা পান তিনি। জানতে পারেন, তাঁর এবং তাঁর স্বামীর বিশেষ মুহূর্ত এক পর্ন সাইটে রয়েছে। প্রথমে ভেবেছিলেন নিছক মজা। কিন্তু ভুল ভাঙতে দেরি হয়নি। কী ভাবে হল? কে করলেন? হাজার ভেবেও কোনও কূল কিনারা পাচ্ছিলেন না হায়দরাবাদের ওই মহিলা। এই সব ভেবে তিনি যখন দিশাহারা, তাঁর স্বামী কিন্তু বেশ ঠান্ডা মাথাতেই ছিলেন। এমনকী তাঁকে পুলিশে জানাতে বাধাও দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। পরে ওই মহিলা জানতে পারেন, আর কেউ নন, টাকার লোভে তাঁর স্বামীই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। স্ত্রীর সম্মানহানি করায় এবং তাঁকে না জানিয়ে বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও পর্ন সাইটে আপলোড করায় ৩৩ বছরের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি আগে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়র ছিলেন। বছর খানেক আগে সেই পেশা ছেড়ে দেন তিনি। তার বদলে মোটা টাকার বিনিময়ে পর্ন সাইটে ভিডিও আপলোড করতে শুরু করেন। পাশাপাশি এসকর্ট সার্ভিসের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। গত বছরের নভেম্বরে নিজের বেডরুমে গোপন ক্যামেরায় স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও করেন। পরে সেটিই ওই পর্ন সাইটে আপলোড করেন।
হায়দরাবাদ পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার এস জয়রাম বলেন, ‘‘ওই ঘরে যে গোপন ক্যামেরা রয়েছে তা বিন্দুমাত্র জানা ছিল না ওই মহিলার। পরে কেরল থেকে এক বন্ধু তাঁকে ফোনে ভিডিওর বিষয়টি জানান।’’ তাঁর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্তে নামে। তদন্তে দেখা যায়, কেরলের থিসারের একটি নির্দিষ্ট আইপি অ্যাড্রেস থেকে ওই ভিডিও ডাউনলোড করা হয়েছে। ওই আইপি অ্যাড্রেসের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যায়, তিনি একটি পর্ন সাইট থেকে তা ডাউনলোড করেছেন। পরে ওই পর্ন সাইটে খোঁজ করে তদন্তকারীরা দেখেন, নভেম্বরে ভিডিওটি লাইভ স্ট্রিমিং করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: নিজস্বীর ফাঁদে ট্রেনে কাটা চার
এ দিকে ওই মহিলার স্বামীর কথাতেও বেশ কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পায় পুলিশ। স্বামীর উপরে পুলিশের সন্দেহ ক্রমশ বাড়তে থাকে। তাঁর ই-মেল এবং ব্যাঙ্ক লেনদেনের উপরে নজর রাখতেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় পুলিশের কাছে। অভিযুক্তের ই-মেলে ওই পর্ন সাইটের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের রেকর্ড ছিল। আর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাঝে মধ্যে মোটা টাকাও জমা পড়ত।
পুলিশ জানিয়েছে, মহিলার স্বামীকে গ্রেফতার করে জেরা করতেই চাপের মুখে নিজের কৃতকর্মের কথা স্বীকার করে নেন তিনি।