কলকাতার পরে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে এ বার আন্দোলন শুরু হল পুণের ফিল্ম ইনস্টিটিউটেও। ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লির জেএনইউ বা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে এ বার আন্দোলন শুরু হল পুণের ফিল্ম ইনস্টিটিউটে। সোমবার রাত থেকে অনশন ধর্মঘটে বসেছেন সেখানকার ছাত্র সংসদের চার নেতা। একই কারণে সোমবার থেকে অনশন চলছে কলকাতার এসআরএফটিআই বা সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটেও।
অভিযোগ, ২০১৩ সালের পর থেকে দফায় দফায় ভর্তি পরীক্ষার ফি, পড়াশোনার ফি এতটাই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বহু ছাত্রছাত্রীর পক্ষে তা বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকে ব্যাঙ্কঋণ নিচ্ছেন, কেউ বা জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন। কেউ কেউ পড়াশোনা চালানোর জন্য বাইরে কাজকর্ম করতে বাধ্য হচ্ছেন। বহু সাধারণ ঘরের ছেলেমেয়ের মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, শুধু টাকার অভাবে দেশের এই প্রতিষ্ঠানে তাঁরা আর পড়াশোনা করতে পারবেন না।
পুণের ‘ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া’ সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীন। পশ্চিমবঙ্গ থেকেও অনেকে পড়তে গিয়েছেন ওই প্রতিষ্ঠানে। অভিনেত্রী চৈতি ঘোষালের ছেলে অমর্ত্য রায় সেখানে পরিচালনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর অভিযোগ, ২০১৫ সালে দেড় হাজার এবং ২০১৭-য় আড়াই হাজার টাকা ছিল ভর্তির পরীক্ষার ফি। আচমকাই দেশের অন্য দুই সমগোত্রীয় প্রতিষ্ঠান, কলকাতার এসআরএফটিআই এবং দিল্লির আইআইএমসি-র সঙ্গে পুণের ভর্তির পরীক্ষা একসঙ্গে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই যৌথ প্রবেশিকা পরীক্ষার ফি বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
পুণেতে ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, মেদিনীপুরের বাসিন্দা রাজর্ষি মজুমদারের অভিযোগ, হস্টেল নিয়ে সারা বছরের পড়াশোনার খরচ ২০১৩ সালেও ছিল ৫৫ হাজার টাকা। সেটা বেড়ে এখন এক লক্ষ ১৮ হাজার টাকা হয়েছে। ‘‘২০১৩ থেকে বহু বার এই নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন ছাত্রনেতারা। উল্টে নোটিস দিয়ে ভয় দেখাতে শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ,’’ বলেন পুণের ওই ছাত্রনেতা।
পুণে ফিল্ম ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ভূপেন্দ্র ঘানতোলা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ভর্তি পরীক্ষার ফি বৃদ্ধি নিয়ে গভর্নিং কাউন্সিলে আলোচনা হয়েছে। পরের বছরের ফি নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। পড়ুয়াদের দাবি নিয়ে গভর্নিং কাউন্সিলের পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা হবে। সেখানে পড়ুয়ারা যাতে সরাসরি নিজেদের দাবি জানাতে পারেন, সেই বিষয়ে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হবে।’’