গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তথ্য পাচারের অভিযোগ ‘নমো’ অ্যাপের বিরুদ্ধে। পাল্টা অভিযোগ কংগ্রেসের অ্যাপ ‘আইএনসি’র বিরুদ্ধেও। টুইটারে সরাসরি নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ রাহুল গাঁধীর। কংগ্রেস সভাপতির বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তুলে পাল্টা টুইট-তোপ বিজেপির। সব মিলিয়ে ফের সরগরম জাতীয় রাজনীতি। নিজেদের অ্যাপ অস্থায়ী ভাবে অকেজো করে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করল কংগ্রেস।
নরেন্দ্র মোদীর নাম ও পদবীর প্রথম অংশ জুড়ে ‘নমো’ নামে যে অ্যাপ লঞ্চ করা হয়েছিল, শুধুমাত্র অনড্রয়েডেই সেই অ্যাপ ৫০ লক্ষ বার ডাউনলোড হয়েছে। বহু নাগরিকই নিজের মোবাইলে নমো অ্যাপ ইনস্টল করেছেন। ইউজাররা সেই অ্যাপে নিজেদের সম্পর্কে যা কিছু তথ্য দিচ্ছেন, সে সবই একটি মার্কিন সংস্থার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। বিজেপির পাল্টা দাবি, কংগ্রেসের মেম্বারশিপ অ্যাপ থেকে তথ্য পাচার করা হচ্ছে বিদেশে।
শনিবার এই অভিযোগ সামনে আসে। ফেসবুক থেকে ইউজারদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়া এবং কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার মতো সংস্থার সঙ্গে বিজেপি, কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন ভারতীয় রাজনৈতিক দলের যোগসূত্রের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দেশের রাজনীতি উত্তাল। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাকে কাজে লাগিয়ে অনৈতিক ভাবে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা হয়েছে বলে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে। ঠিক সেই সময়েই নমো অ্যাপ এবং আইএনসি অ্যাপ থেকে ইউজারদের ব্যক্তিগত তথ্য বিনা অনুমতিতে তৃতীয় পক্ষের কাছে পাচার হওয়ার অভিযোগ ওঠায় আরও জটিল হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি।
আরও পড়ুন: বীজ বুনছে সঙ্ঘ, পার্টি কংগ্রেসে শিখবেন কারাটেরা
রাহুল গাঁধী রবিবার টুইট করেছিলেন। লিখেছিলেন, ‘‘হাই! আমার নাম নরেন্দ্র মোদী। আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। যখন আপনারা আমরা অফিশিয়াল অ্যাপে সাইন আপ করেন, তখন আমি আপনাদের সম্পর্কে সব তথ্য মার্কিন সংস্থায় আমার বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দিই।’’
নমো অ্যাপ যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য যে একটি মার্কিন সংস্থায় গিয়েছে, সে কথা বিজেপি অস্বীকার করতে পারেনি। তবে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, মার্কিন সংস্থাকে দিয়ে বিশ্লেষণ করানো হয়েছে, কোন কোন বিষয় কোন কোন ইউজারের কাছে কতটা প্রাসঙ্গিক। যে ইউজারের কাছে যে বিষয় প্রাসঙ্গিক, তাঁর কাছে সেই সংক্রান্ত খবরাখবর পাঠানোর জন্যই এই বিশ্লেষণের ব্যবস্থা বলে বিজেপি দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: ‘বাবাসাহেব আমার মতোই পিছিয়ে পড়াদের প্রেরণা’
নমো অ্যাপের বিষয়ে সাফাই দিয়েই অবশ্য থামেনি বিজেপি। কংগ্রেসের অ্যাপের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনেছে তারা। ইউজারদের অনুমতি না নিয়েই আইএনসি অ্যাপ থেকে তথ্য পাঠানো হচ্ছে সিঙ্গাপুরের সার্ভারে। দাবি শাসক দলের। বিজেপির তরফে অমিত মালব্যের টুইট, ‘‘হাই! আমার নাম রাহুল গাঁধী। আমি ভারতের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দলটির সভাপতি। যখন আপনারা আমার অফিশিয়াল অ্যাপে সাইন আপ করেন, তখন আমি আপনাদের সম্পর্কে সব তথ্য সিঙ্গাপুরে আমার বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দিই।’’
অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগের সরগরম টুইটার। কখনও রাহুল গাঁধী নিজে, কখনও কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারের দায়িত্বে থাকা দিব্যা স্পন্দনা টুইট করে বিজেপি-কে আক্রমণ করছিলেন। বিজেপির তরফেও পাল্টা জবাব দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সোমবার সকালে পরিস্থিতি একটু অন্য রকম হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের অ্যাপের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ ওঠায়, কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় রাহুল ব্রিগেড। অস্থায়ী ভাবে অ্যাপটিকে অকেজো করে দেয় তারা। ওয়েবসাইটে কিছু পরিবর্তনের কাজ চলেছে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।