ফাইল চিত্র।
যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের অন্যান্য নিরিখে খুব বেশি যে এগিয়ে আছে, তা নয়। তবে বিনামূল্যে ওয়াইফাই পরিষেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব স্টেশনকেই পিছনে ফেলে দিয়েছে হাওড়া ও শিয়ালদহ।
জানুয়ারিতে রেলের তথ্যপ্রযুক্তি ও দূরসঞ্চার পরিকাঠামো নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রেলটেল-এর প্রকাশিত তথ্যের নিরিখে হাওড়া স্টেশনে মাসে চার লক্ষ ৭২ হাজারের বেশি মানুষ ওয়াইফাই পরিষেবা ব্যবহার করেছেন। আর শিয়ালদহে ওই পরিষেবা ব্যবহার করেছেন চার লক্ষ ৫৩ হাজার যাত্রী।
সর্বভারতীয় মাপকাঠিতে ডেটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিয়ালদহের চেয়ে এগিয়ে আছে সেকেন্দরাবাদ। সেখানে মাসে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা হাওড়া-শিয়ালদহের চেয়ে গড়ে এক লক্ষ কম। তালিকায় পরের দিকে আছে পটনা, কল্যাণ, দিল্লি, চেন্নাই সেন্ট্রাল ও ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস।
এ রাজ্যে হাওড়া-শিয়ালদহ ছাড়া বিনামূল্যের ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে আসানসোল ও খড়গপুর স্টেশন। শহরতলির বিভিন্ন স্টেশনের মধ্য নৈহাটি, ব্যান্ডেল, বারাসত, সোনারপুরে যাত্রীদের ওই পরিষেবা ব্যবহারে বিশেষ আগ্রহ দেখা গিয়েছে। সেই তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে বর্ধমান, দুর্গাপুর বা বোলপুরের মতো স্টেশন। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং বা ঘুম স্টেশনে যাত্রীদের ওয়াইফাই ব্যবহারের প্রবণতা আবার দিঘার তুলনায় বেশি। কলকাতা স্টেশনে সম্প্রতি দুরপাল্লার ট্রেনের সংখ্যা বাড়তে শুরু করায় ওই স্টেশনেও ওয়াইফাই ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে।
ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতা থেকে যাত্রীদের রেল ভ্রমণের ধরন ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহের সম্পর্কে ধারণা মেলে বলে জানাচ্ছেন রেলকর্তারা। হাওড়া-শিয়ালদহের মতো স্টেশনে যাত্রীরা বিনোদন ছাড়াও নানা পরিষেবা খোঁজেন। দার্জিলিং বা ঘুমে আবহাওয়া ছাড়াও স্থানীয় ভূগোল ও পর্যটনস্থলের খোঁজ নেওয়া হয়। যান এবং বাস পরিষেবা নিয়েও খোঁজ করার প্রবণতা রয়েছে।
যাত্রীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতা থেকে উৎসাহী হয়ে ভবিষ্যতের জন্য আয়ের দরজা খোলার পথে অনেক দূর এগিয়েছে রেল। শহরতলির লোকাল, দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনে ‘কন্টেন্ট অন ডিমান্ড’ বা মোবাইলে বিনোদন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে তারা।
রেলটেল সারা দেশে ৫৬০০-র বেশি স্টেশনে ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করেছে। তবে আগামী মে মাসের পর থেকে দেশের প্রথম সারির ৪১৫টি স্টেশনে ওয়াইফাই পরিষেবা দেওয়া থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে গুগ্ল। রেলের সঙ্গে তাদের পাঁচ বছরের চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়েছে। রেলটেলের বরিষ্ঠ জনসংযোগ আধিকারিক সুচরিতা প্রধান জানান, ওই স্টেশনগুলিতে ভবিষ্যতে তাঁরাই পরিষেবা দেবেন। খুব দ্রুত দেশের বেশির ভাগ স্টেশনকে এই পরিষেবার আওতায় আনার চেষ্টা করছেন তাঁরা।