ফাইল ছবি।
রবিবার বার্নালায় মাসির বা়ড়ি যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের গুলিবৃষ্টিতে মৃত্যু হয় গায়ক তথা কংগ্রেস নেতা সিধু মুসেওয়ালার। পুলিশ জানাচ্ছে, সিধুর শরীরে ৩০ রাউন্ড গুলি পাওয়া গিয়েছে। নিজেকে বাঁচাতে গুলিও চালিয়েছিলেন সিধু। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। শরীরে অন্তত ৩০টি গুলি নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সিধু।
কিন্তু কী ভাবে ঘটেছিল ভয়ঙ্কর এই ঘটনা? মাহিন্দ্রা থর এসইউভি গাড়ির সামনের আসনে চালকের ঠিক পাশেই ছিলেন সিধু। পিছনের আসনে ছিলেন দুই বন্ধু, গুরবিন্দর সিংহ ও গুরপ্রীত সিংহ। দু’জনেরই কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে মৃত্যু। আপাতত তাঁরা হাসপাতালে শুয়ে। সে দিনের ঘটনার কথা ভাবলেই হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে সিধুর দুই বন্ধুর। কেমন ছিল সেই ঘটনাক্রম? সংবাদমাধ্যমকে সে কথা জানিয়েছেন, গুরবিন্দর।
উনি বলছেন, ‘‘বার্নালায় সিধুর মাসির বাড়ির গ্রামের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম। আচমকাই পিছন থেকে একটি গুলি চলার আওয়াজ পেয়ে চমকে পিছনের দিকে তাকাই। সেই সময়ই একটি গাড়ি আমাদের গাড়ির ঠিক সামনে আড়াআড়ি ভাবে পথ আটকে দাঁড়ায়।’’
গুরবিন্দরের দাবি, সামনের সেই গাড়ি থেকেই এক জন নেমে অটোম্যাটিক অ্যাসল্ট রাইফেল থেকে তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। তিনি বলেন, ‘‘তখন সিধুও কোমর থেকে রিভলভার বের করে দু’রাউন্ড গুলি চালায়। কিন্তু তা অত্যাধুনিক এএন ৯৪-এর জবাব ছিল না।’’ তাঁদের গাড়িকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে গুলিবৃষ্টি চলতে থাকে। বন্ধুর দাবি, উপায় নেই দেখে, তার মধ্যেও গাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন সিধু। কিন্তু মুহূর্তে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান।
পুলিশ সূত্রে খবর, সিধুর শরীরের অন্তত ৩০টি গুলি লেগেছিল। দশ জনেরও বেশি আততায়ী একসঙ্গে বন্দুক থেকে গুলি চালিয়েছিল। পঞ্জাব সরকার শনিবারই সিধু-সহ অন্তত চারশো জনের নিরাপত্তা কমিয়ে দেয়। রবিবার গাড়িতে জায়গার অভাবে সিধুর প্রাপ্য পাঁচ জন নিরাপত্তারক্ষীকেও নেওয়া হয়নি। ফলে সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থাতেই সিধুকে পেয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
সিধুর পিছনের গাড়িতেই আসছিলেন তাঁর বাবা। সেই গাড়িতে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। গুলিচালনা শেষ হতেই দুষ্কৃতীরা গাড়িতে পালায়। সিধুর গাড়ির দিকে ছুটে আসেন তাঁর বাবা। এর পর আরও বহু মানুষ সেখানে উপস্থিত হন। রক্তাক্ত অবস্থায় সিধুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।