আইনজীবী মুকুল রোহতগি। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
প্রমোদতরীতে মাদক মামলায় অবশেষে জামিন পেলেন শাহরুখ-তনয় আরিয়ান খান। একই সঙ্গে জামিন পেয়েছেন তাঁর বন্ধু আরবাজ মার্চেন্ট এবং মডেল মুনমুন ধামেচাও।
বিচারপতি এন ডব্লু সাম্ব্রের সামনে আরিয়ানের হয়ে সওয়াল করছিলেন প্রবীণ আইনজীবী তথা দেশের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল মুকুল রোহতগি। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (এনসিবি)-র হয়ে সওয়াল করতে দাঁড়িয়েছিলেন অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অনিল সিংহ। উভয় পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বিচারপতি সাম্ব্রে ধৃত আরিয়ান, আরবাজ ও মুনমুনের জামিন মঞ্জুর করেন।
এনসিবি-র অভিযোগ ছিল, অভিযুক্তরা একটি বড় ষড়যন্ত্রের অংশ। আরিয়ানের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রয়েছে। সেই কারণেই তাঁদের হেফাজতে রেখে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনীয়তা আছে। পাশাপাশি এনসিবি-র আরও অভিযোগ, আরিয়ান এক জন প্রভাবশালী। সাক্ষীদের প্রভাবিত এবং প্রমাণ নষ্টের চেষ্টাও আগেই করা হয়েছে।
আরিয়ানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদক কারবারীদের সম্পর্ক নিয়ে এনসিবি-র আইনজীবীর সওয়ালের পাল্টা রোহতগি বলেন, ‘‘ওই প্রমোদতরীতে ১৩০০ জন ছিলেন। তাজ হোটেলে ৫০০ ঘর। যদি দু’জন দু’টি ঘরে বসে কিছু লোক মাদক গ্রহণ করেন, তা হলে কি আপনি হোটেলের সব লোককেই আটক করবেন? এই মামলায় ষড়যন্ত্রের কোনও উপাদান মজুত নেই।’’
মুকুল রোহতগি আরও সওয়াল করেন, আরিয়ানের গ্রেফতারি সংবিধানের ২২ ধারার সরাসরি লঙ্ঘন। কারণ ওঁকে কোন কোন ধারায় গ্রেফতার করা হচ্ছে, তা জানানো হয়নি। পাশাপাশি তিনি বলেন, যে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের ভিত্তিতে মামলা তৈরি হয়েছে, তা দু’বছরের পুরনো এবং সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক।
গত সপ্তাহে বিশেষ এনডিপিএস আদালত আরিয়ানদের জামিনের আর্জি খারিজ করার পিছনে কারণ দেখিয়েছিল, আরিয়ান জানতেন যে তাঁর বন্ধু আরবাজের জুতোয় চরস লুকোনো আছে। যাকে আদালত ‘কনশাস পজেশন’ হিসেবে অভিহিত করেছিল। বম্বে হাই কোর্টে রোহতগি প্রশ্ন তোলেন নিম্ন আদালতের রায় নিয়ে। বলেন, ‘‘আরবাজের জুতোয় কী পাওয়া যাবে তার নিয়ন্ত্রণ আমার মক্কেলের হাতে নেই। তাই আদালত বর্ণিত ‘কনশাস পজেশন’-এর প্রশ্ন উঠছে না। আরবাজ আমার চাকর নন, তিনি কী করবেন তা আমার নিয়ন্ত্রণে নেই।’’
মুকুল সওয়াল করেন, ‘‘ওঁরা কমবয়সী ছেলে। ওঁদের রিহ্যাবে পাঠানো যেতে পারে। যদি আপনার কাছে সামান্য পরিমাণ মাদক থাকে, তা আপনি গ্রহণ করেন এবং রিহ্যাবে যেতে ইচ্ছুক হন, তাহলে শাস্তির প্রশ্ন আসে না।’’
উভয় পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিচারপতি সাম্ব্রে তিন জনকেই জামিন দেন। আদালত থেকে বেরিয়ে মুকুল বলেন, ‘‘আমার কাছে এই মামলা আর পাঁচটা মামলার মতোই— কিছু মামলায় জয় আসবে, কিছু মামলায় হার। কিন্তু আমি খুশি কারণ আরিয়ান জামিন পেয়েছেন।’’