সমালোচনার মুখে পড়ে শেষমেশ টিকাকরণের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। তার পরেও জোগানে ঘাটতি নিয়ে অভিযোগ উঠে আসছে ভূরি ভূরি। কেন্দ্রের দাবি, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। আদৌ কি সেই লক্ষ্য পূরণ হবে? এ যাবৎ টিকাকরণের পরিসংখ্যান দেখে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। আবার তা একেবারে অসম্ভব নয় বলেও দাবি উঠছে। লক্ষ্যপূরণের দৌড়ে বর্তমানে কোথায় দাঁড়িয়ে ভারত, জেনে নিন বিশদে।
অতিমারি ঠেকাতে এই বছরই দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণ সেরে ফেলার লক্ষ্য নিয়ে নেমেছে কেন্দ্র। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে তারা জানায়, দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যা প্রায় ৯৪ কোটি। এ বছরের মধ্যেই সকলের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। গত সাত দিনে দেশে টিকাকরণের গড় ৪০ লক্ষের আশেপাশেই রয়েছে। তাতেই সার্বিক টিকাকরণের লক্ষ্য আদৌ পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
দেশে টিকাকরণের যাবতীয় তথ্য কো-উইন অ্যাপে নথিভুক্ত করা হয় প্রতিনিয়ত। শনিবার দুপুর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, এ পর্যন্ত মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র ৬ কোটি ১৫ লক্ষ ৭৫ হাজার ৭৩৮ জনেরই টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। অর্থাৎ দু’টি করে টিকাই পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। একটি করে টিকা পেয়েছেন ২৮ কোটি ১১ লক্ষ ৫২ হাজার ৪০৩ জন নাগরিক।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সেই নিরিখে একটি করে টিকা পাওয়া সকলকেও দ্বিতীয় টিকা দিতে হবে। আবার কোনও টিকাই পাননি যে ৫৯ কোটি ৭২ লক্ষ ৭১ হাজার ৮৫৯ জন নাগরিক। তাঁদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮১ দিন সময় রয়েছে সরকারের হাতে। কোনও টিকাই পাননি যে ৫৯ কোটি ৭২ লক্ষ, তাঁদের একটি করে টিকা দিতে দৈনিক ৩৩ লক্ষ করে টিকা দিতে হবে কেন্দ্রকে। আর একটি করে টিকা পেয়েছেন যাঁরা এবং যাঁরা কোনও টিকাই পাননি, তাঁদের সকলের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করতে দৈনিক ৮১ লক্ষ ৫৩ হাজারটি করে টিকা দিতে হবে সরকারকে।
কেন্দ্র টিকাকরণের দায়িত্ব নিলেও এখনও জোগানে ঘাটতি রয়েছে ব্যাপক। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, তা পূরণ করা না গেলে সমূহ বিপদ রয়েছে সামনে। তবে গত ২২ জুনই দেশে ২৪ ঘণ্টায় ৮৬ লক্ষের বেশি মানুষ টিকা পেয়েছিলেন। এই রেশ যদি ধরে রাখা যায়, তা হলে লক্ষ্যপূরণ হওয়া অসম্ভব নয় বলে মত তাঁদের। সে ক্ষেত্রে টিকার জোগান বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই বলে মত তাঁদের।