অরবিন্দ কেজরীবাল। ছবি: পিটিআই।
ভোট যত এগিয়ে আসছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কাদা ছোড়াছুড়িও। একে অপরকে লাগাতার কুকথা বলে চলেছেন রাজনীতিকরা। তাঁকেও এর শিকার হতে হয়েছে। তা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। গোটা ঘটনায় অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি পশ্চিম দিল্লিতে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে কেজরীবালকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে উল্লেখ করেছিলেন বিজেপির সাংসদ প্রবেশ বর্মা। বুধবার প্রথমে তা নিয়ে টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কেজরীবাল। তিনি লেখেন, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে দিন-রাত দিল্লির জন্য কাজ করে এসেছি। দিল্লিবাসীর জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছি। রাজনীতিতে প্রবেশের পর অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তা-ও মানুষের যাতে ভাল হয়, সেই চেষ্টাই করে গিয়েছি। বিনিময়ে আজ আমাকে সন্ত্রাসবাদী বলছে বিজেপি। অত্যন্ত ব্যথিত আমি।’’
কেজরীবালের টুইট।
আরও পড়ুন: সিএএ বিরোধী ভোটাভুটি পিছলো ইইউ পার্লামেন্টে, কূটনৈতিক সাফল্য দেখছে নয়াদিল্লি
তার পর এ দিন সাংবাদিক বৈঠক ডেকেও ক্ষোভ উগরে দেন কেজরীবাল। দিল্লির ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘মানুষকে ওষুধ জোগাড় করে দিয়েছি, অসহায় মানুষের জন্য অনেক কিছু করেছি। পরিবার বা নিজেকে নিয়ে কখনও ভাবিনি। দেশের জন্য প্রাণও বিসর্জন দিতে পারি আমি। তার পরেও আমি কীভাবে সন্ত্রাসবাদী হয়ে গেলাম? নিজে ডায়বিটিসের রোগী। দিনে চার বার ইনসুলিন নিই। ডাক্তাররা পইপই করে রাজনীতিতে আসতে বারণ করেছিলেন। বলেছিলেন, আমি বাঁচব না। চাইলে বন্ধু-বান্ধব এবং সহকর্মীদের মতো বিদেশ চলে যেতে পারতাম। তার বদলে চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছি। সন্ত্রাসবাদী এত কিছু করে কি? দিল্লিবাসীর উপরই এই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিলাম আমি। ওঁরাই ঠিক করবেন, আমি ওঁদের ছেলে, ভাই নাকি সন্ত্রাসবাদী।’’
আরও পড়ুন: ‘এ সব পোকামাকড়কে দ্রুত খতম করুন’, শরজিলের বিরুদ্ধে সরব শিবসেনা
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৫ জানুয়ারি। একটি নির্বাচনী সভায় কেজরীবালকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে উল্লেখ করেন প্রবেশ বর্মা। শাহিন বাগ আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘ফের কেজরীবাল ক্ষমতায় এলে শাহিন বাগের মতো লোকজন রাস্তায় নেমে আসবে। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের যেমন কাশ্মীর ছেড়ে চলে আসতে হয়েছিল, তেমন পরিস্থিতি দেখা দেবে। মুসলিম পুরুষরা হিন্দু মেয়েদের তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে প্রায়শই শুনে থাকি আমরা। অথচ কোনও পদক্ষেপই করা হয় না। কারণ কেজরীবালের মতো সন্ত্রাসবাদীরা সর্বত্র ঘাপটি মেরে রয়েছে। কাশ্মীরে পাকিস্তানি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়া উচিত নাকি কেজরীবালের মতো সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে?’’
কুকথা বলার জন্য ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের শাস্তির মুখে পড়েছেন প্রবেশ। তাঁর বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ)। প্রবেশ বর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে হবে বলে দাবি তুলেছে তারা।