মোনালি রাহালকর ও রাহুল বাহুলিকর সংগৃহীত ছবি
বিশ্বের অনেক বিজ্ঞানীই মনে করেন চিনের উহান থেকেই কোভিডে ছড়িয়েছে সারা বিশ্বে। বিশেষজ্ঞদের আরও দাবি, ল্যাবে একটি প্রজেক্ট চলছিল। এই প্রোজেক্ট চলার সময়ই ল্যাবরেটরিতে এই ভাইরাসটি তৈরি হয়। এ বার ভারতের পুণের এক বিজ্ঞানী দম্পতিও একই দাবি করলেন। রাহুল বাহুলিকর এবং মোনালি রাহালকর নামে ওই দম্পতির বক্তব্য, সারা পৃথিবীর মানুষের দুর্ভোগ দেখে তাঁরা করোনাভাইরাসের উৎস সম্পর্কে খোঁজে নামেন।
মোনালি রাহালকর বলেন, “প্রথম থেকেই দুর্ভোগের দিকে তাকিয়ে আমরা ভাইরাসের উদ্ভব জানতে কৌতূহলে ও উদ্বেগে ছিলাম। আমরা খুঁজে পাই যে, সার্স-সিওভি-২ ভাইরাস পরিবারের এক সদস্য আরএটিজি১৩ ভাইরাসকে।’’ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে এই অনুসন্ধানের সময় তাঁরা দক্ষিণ চিনের মোজিয়াংয়ের একটি পরিত্যক্ত তামার খনি সম্পর্কিত নথি হাতে পান। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে খনিগহ্বর পরিষ্কার করার জন্য ৬ জন কর্মীকে নিয়োগ করা হয়। ওই খনিগহ্বর বাদুড়ের মলে পূর্ণ ছিল।
রাহালকর ব্যাখা করেন, ‘‘বাদুড়ের মল টুকরো টুকরো হয়ে যায় এবং স্পর্শ করলে ধুলোতে পরিণত হয়। কেউ যখন এর উপরে চলাফেরা করে, তখন বায়ুমণ্ডলে মিশে যায়। বাতাসকে অ্যালার্জিক করে তোলে। খনিতে কাজ করার পরে, ওই ৬ কর্মী খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের জ্বর, কাশি এবং রক্ত জমাট বাঁধার মতো উপসর্গ ছিল। যা এখন কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে দেখা যায়। ওই ৬ কর্মীক ক্লান্তির মতো উপসর্গও ছিল, তারপরে ফুসফুসে নিউমোনিয়া হয়। পরবর্তীতে ৬ জন খনি শ্রমিকের মধ্যে ৩ জন মারা যান।’’ রাহালকর যোগ করেছেন যে বিশ্বজুড়ে কোভিড রোগীদের রেডিয়োলজিক্যাল রিপোর্ট মোজিয়াংয়ের ৬ জন খনি শ্রমিকের মতোই। আমরা আরও জানতে পেরেছিলাম যে সার্স-সিওভি-২ ভাইরাসের পরিবারের আরেক সদস্যকে মোজিয়াংয়ের খনি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং আমরা ২০২০ সালের মে মাসে এই বিষয়ে একটি গবেষণাপত্রও প্রকাশ করেছি।
রাহুল বাহুলিকরের দাবি, তাঁদের গবেষণাপত্র প্রকাশ করার কিছুদিন পর টুইটারের মাধ্যমে এক ব্যক্তি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যাঁর ইউজার নেম সিকার। যিনি একই গবেষণাতে মগ্ন ছিলেন। তিনিও একই জিনিস খুঁজে পান। তিনি ওই খনিকর্মীদের উপসর্গের বিষয়ে তথ্যও দেন। ওই শ্রমিকদের দেওয়া ওষুধ কোভিড রোগীদের জন্য দেওয়া ওষুধের মতো ছিল। মোনালি রাহালকর জানান, খনিকর্মীদের অ্যান্টিভাইরাল অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছিল। কারণ, এখানে ছত্রাকের সংক্রমণ সহ আরও গৌণ সংক্রমণ ছিল।
মোনালি রাহালকর এবং রাহুল বাহুলিকর ‘চিনের করোনার ডাক্তার’ নামে পরিচিত পালমনোলজিস্ট ঝং নানশানের কথাও উল্লেখ করেছেন। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ৬ জন খনিশ্রমিকদের পর্যবেক্ষণ করার পরে নানশান এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন যে শ্রমিকরা ভাইরাল সংক্রমণের কারণেই অসুস্থ হয়েছেন।