অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
অপরাধের অভিযোগ যত আসে, প্রমাণ হয় তার সামান্যই। এটাকে ‘খুবই দুঃখজনক’ মনে করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর মতে, বর্তমান যুগে পুলিশের তথাকথিত ‘থার্ড ডিগ্রি’ প্রয়োগ বা ফোনে আড়ি পাতার মতো পুরনো কৌশলে অপরাধ কমানো বা প্রমাণ করার সম্ভব নয়। ‘বুরো অব পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিপিআরডি)’-এর ৪৯-তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এখানে এক অনুষ্ঠানে আজ অমিত ওই মত জানান। ফৌজদারি তদন্তে অকাট্য প্রমাণ পেশের জন্য ফরেন্সিক পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
পাশাপাশি ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে বদল আনা দরকার বলেও মন্তব্য করেন অমিত। পুলিশের অন্যতম থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক হিসেবে বিপিআরডি-কেই এ নিয়ে আলোচনা শুরু করতে ও তাতে উঠে আসা মতামত সুপারিশ আকারে তা মন্ত্রককে পাঠাতে বলেছেন তিনি। অমিতের কথায়, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং ফৌজদারি দণ্ডবিধি বহু দিন পাল্টানো হয়নি। ফলে আপনাদের পরামর্শগুলি সুপারিশের আকারে মন্ত্রকে জমা দেবেন।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, দেশে অপরাধ প্রমাণের হার খুব কম। এটা বেশি দিন চলতে পারে না। তাঁর কথায়, ‘‘এই অবস্থা পাল্টাতে হবে। তদন্তে যখন ফরেন্সিক পরীক্ষার সাহায্য নেওয়া হবে, তখনই এই অবস্থা পাল্টাবে। অপরাধ বন্ধ করতে হলে পুরনো পদ্ধতি ছাড়তে হবে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে কাজে লাগাতে হবে।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, যে সব ফৌজদারি অপরাধে দোষীর সাত বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হতে পারে, সেই সব তদন্তে ফরেন্সিক প্রমাণ বাধ্যতামূলক করার কথাও ভাবছে কেন্দ্র। অমিত বলেন, ‘‘চার্জশিটে আনা অভিযোগের প্রমাণ যদি ফরেন্সিক পরীক্ষাতেই পাওয়া যায়, তা হলে বিচারক বা অভিযুক্তের আইনজীবীর কিছু করার থাকবে না। স্বাভাবিক ভাবেই অপরাধ প্রমাণের হার বাড়বে।’’
অনুষ্ঠানে উপস্থিতি পুলিশ অফিসারদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পরামর্শ, অপরাধমূলক ঘটনা কেন ঘটছে, উদ্দেশ্য কী, কী ভাবে চক্রান্ত করা হচ্ছে— তা জানতে জাতীয় এবং রাজ্য স্তরে একটি ‘বুরো’ তৈরি করা হোক। এ ছাড়া একটি পুলিশ ও জাতীয় ফরেন্সিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার পরিকল্পনাও যে সরকারের রয়েছে, তা-ও জানিয়েছেন অমিত। পুলিশ বাহিনীর আধুনিকীকরণের উপরেও গুরুত্ব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।