—ফাইল চিত্র।
বিপিএফের সঙ্গে মিত্রতা ভঙ্গের কথা আগেভাগে ঘোষণা করে মুখ পুড়ল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের।
দিল্লি রওনা দেওয়ার আগে নেডা জোটের মাথা তথা রাজ্যের অর্থ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানিয়েছিলেন, বিধানসভা নির্বাচন দূরের কথা, তার আগে বিটিআর (আগে নাম ছিল বিটিসি) নির্বাচনেও বিপিএফের সঙ্গে জোটের প্রশ্ন নেই। একই মত জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি রঞ্জিৎকুমার দাস। এর পর তাঁরা চার্টার্ড বিমানে অসমের বিধানসভা ভোটে একলা চলার কথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাতে দিল্লি যান। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালও।
কিন্তু, দলীয় সূত্রে খবর, রাতে তিন ঘণ্টার বৈঠকে জোট ভাঙার বিষয়ে তাড়াহুড়ো করতে রাজি হননি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বরং বিটিআর নির্বাচনের ফল কী হয়, তা দেখতে চাইছেন তাঁরা। আলোচনায় ছিলেন বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা, প্রাক্তন সভাপতি অমিত শাহ, সাংসদ দিলীপ শইকিয়া, উত্তর-পূর্বের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অজয় জামওয়াল ও অসমের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বৈজয়ন্ত পাণ্ডা।
বৈঠকের পরে দলীয় সূত্রে বলা হয়, নড্ডা-শাহরা এখনই মিত্রতা ভাঙার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেননি। অসম গণ পরিষদের ব্যাপারেও রাজ্য বিজেপিকে তাড়াহুড়ো করতে বারণ করা হয়েছে। নড্ডা ২৬-২৭ নভেম্বর গুয়াহাটি আসবেন। দলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের পরে জোটের দলগুলির সঙ্গেও আলোচনায় বসবেন। তার পরে হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জোট ভাঙার অনুমতি না দিলেও রঞ্জিৎ দাস আজ ফের বলেছেন, “বিপিএফের সঙ্গে জনসমর্থন নেই।
বড়োল্যান্ডের ভোটেও তার প্রতিফলন হবে। এই মিত্রতা রেখে লাভ নেই, তা আমরা স্পষ্ট জানিয়ে এসেছি। বিটিআর ভোটের ফল বেরোলেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বুঝতে পারবেন, কেন আমরা একলা লড়ার কথা বলেছি।” হিমন্ত এ দিন বলেছেন, “বিপিএফের সঙ্গে মিত্রতা নিয়ে আলোচনাই হয়নি! আমরা ওদের হাতে থাকা ১২টা আসনই ছিনিয়ে নেব।
আলোচনা হয়েছে বিশ্বজিৎ দৈমারির বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে।”
বিপিএফের কার্যনির্বাহী সভাপতি তথা সাংসদ বিশ্বজিৎ দৈমা আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন, বিপিএফ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি এ বার বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। সাংসদ দিলীপ শইকিয়া বলেন, “বিটিআর নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে বিপিএফের কোনও মিত্রতা নেই এ কথা স্পষ্ট। বিশ্বজিৎ দৈমারি ও বিপিএফের সাধারণ সম্পাদক ইমানুয়েল মুশাহারি বিজেপিতে যোগ দেবেন আগামী কাল। বিপিএফের অধিকাংশ নেতা-সদস্যই ফল ঘোষণার পরে বিজেপিমুখী হবে। আশা করি আর মিত্রতার প্রশ্নই আসবে না।”
বিপিএফ প্রধান হাগ্রামা মহিলারি বলেছেন, “জোট ভাঙার সাহস থাকলে বিজেপি আমাদের তিন মন্ত্রীকে অপসারণ করে দেখাক।” রাজ্য বিজেপির সভাপতি রঞ্জিৎ বলেন, “এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।” অগপর সঙ্গে মিত্রতা নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “যদি কোথাও অগপর প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা না-থাকে সেখানে মিত্রদল বলে জোর করে তাদের প্রার্থী দিয়ে লাভ নেই। তবে অগপর সঙ্গে মিত্রতার থাকার পক্ষে আমি মত দিয়ে এসেছি।”
অগপর একাধিক বিধায়ক বলেছেন, তাদের হাতে থাকা কোনও আসন কাড়া চলবে না। শইকিয়া বলেন, “এই সব কথা মূল্যহীন। তাঁরা নিজের সমর্থকদের উৎসাহ দিতে এ সব বলছেন। ঠিক সময়ে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মিত্রতার রাজনীতিতে আমরা আস্থা রাখি। কিন্তু কে থাকবে কে যাবে, তা পরে ঠিক হবে।”