হ্রদগুলি গত তিন দশক ধরে বরফে গলা জলে তৈরি হয়েছে বলে অনুমান। ছবি: পিক্সাবে।
সাম্প্রতিক সময়ে যে হারে হিমালয়ের বরফ গলতে শুরু করেছে, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, আগামী দিনে আদৌ কোনও হিমবাহ অবশিষ্ট থাকবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছেন তাঁরা। এই অবস্থায় আরও একটি উদ্বেগজনক রিপোর্ট প্রকাশ্যে এল।
‘নেচার জিয়োসায়েন্স’ নামে একটি জার্নালে ওই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে দাবি, গত ২০ বছরে হিমালয়ে যে পরিমাণ বরফ গলেছে, তাতে অন্তত ৫৭ কোটি হাতির সমান ওজন কমেছে হিমবাহের। গবেষকদের দাবি, যে বরফ গলেছে, তা মূলত হিমবাহের উপরিপৃষ্ঠের তলার বরফ।
পরিবেশ দূষণের ফলে যে ভাবে উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে উষ্ণায়ন, তাতে গত দু’-তিন দশক ধরেই দ্রুত হারে গলতে শুরু করেছে হিমালয় পর্বতমালার ‘গ্লেসিয়ার’ বা হিমবাহগুলি। হিমবাহের বরফ গলা জলের স্রোতই আশপাশের মাটি ও নুড়ি, পাথরগুলিকে ভাসিয়ে নিয়ে এসে হিমালয়ের কোলে বহু প্রাকৃতিক হ্রদ তৈরি করেছে। উষ্ণায়নের ফলে হিমালয়ের হিমবাহগুলি এত বেশি সংখ্যায় এত দ্রুত গলতে শুরু করেছে যে সেই প্রাকৃতিক হ্রদগুলি হয়ে পড়েছে বিশাল। শুধুই চেহারার নিরিখে নয়, হিমালয়ের কোলের সেই প্রাকৃতিক হ্রদগুলির গভীরতাও কম নয়। গবেষকরা দেখেছেন, হিমবাহগুলি উষ্ণায়নের জেরে যে ভাবে গলতে শুরু করেছে, তাতে বরফ গলা জলের তোড়ে হ্রদগুলির জলকে ঘিরে থাকা মাটি ও নুড়ি-পাথরের দেওয়ালগুলি ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘মোরেন’। গবেষকদের আশঙ্কা, সেই বরফ গলা জলে টইটম্বুর হ্রদগুলি ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে হিমালয়ের কোলে থাকা গ্রাম ও জনপদগুলিকে। ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে গঙ্গা-সহ হিমালয় পর্বতমালা থেকে বেরিয়ে আসা নদীর অববাহিকাগুলিকে।