ভাসছে হিমাচল, বিপাশায় মুহূর্তে তলিয়ে গেল বাস

রাগী নদী ফুঁসতে ফুঁসতে এসে টেনে নিয়ে গেল আস্ত একটা বাস। মুহূর্তে সেটা তলিয়ে গেল বিপাশার জলে। বাসটিতে কোনও যাত্রী ছিলেন কিনা স্পষ্ট নয়। শিমলা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে কুলুর কাছে সেই বিধ্বংসী দৃশ্যই ছড়িয়ে প়ড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৪২
Share:

তেড়েফুঁড়ে: উপচে পড়ছে বিপাশার জল। তার মধ্যেই ঝুঁকির যাতায়াত। সোমবার কুলুতে। ছবি: পিটিআই।

রাগী নদী ফুঁসতে ফুঁসতে এসে টেনে নিয়ে গেল আস্ত একটা বাস। মুহূর্তে সেটা তলিয়ে গেল বিপাশার জলে। বাসটিতে কোনও যাত্রী ছিলেন কিনা স্পষ্ট নয়। শিমলা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে কুলুর কাছে সেই বিধ্বংসী দৃশ্যই ছড়িয়ে প়ড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

Advertisement

রেকর্ড বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১২৭.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে মানালিতে। বিপর্যয় চলছে গত কয়েক দিন ধরেই। নিরাপত্তাসীমা পার করে বইছে বিপাশা নদী। ধস নেমে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। গত দু’দিনে অন্তত ২১ জনকে উদ্ধার করেছে বায়ুসেনা।

হিমাচল, পঞ্জাব মিলিয়ে শুধু উত্তর ভারতেই এখনও পর্যন্ত বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। এরই মধ্যে ফের কেরলে চোখ রাঙাচ্ছে বৃষ্টি। আগামী দু’দিন সেখানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। রবিবার রাতে টুইট করে কেরলের পাঁচটি জেলায় সতর্কতা জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।

Advertisement

ধস নেমে বন্ধ হয়ে গিয়েছে হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলার হানোগি মন্দির সংলগ্ন চণ্ডীগড়-মানালি ২১ নম্বর জাতীয় সড়ক। কিন্নাউর ও চেম্বা জেলায় বন্ধ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা।

দেখুন সেই ভিডিয়ো

এ দিনও ফের নতুন করে ভারী বৃষ্টি ও তুষারপাতের পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহবিদেরা। বন্ধ রাখা হয়েছে কিন্নাউর, কুলু ও কাংড়া জেলার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুল। বৃষ্টির জেরে স্থানীয়দের সঙ্গে সঙ্গে বিপদে পড়েছেন পর্যটকেরাও।

সোদপুরের অঞ্জন দাস মানালিতে হোটেল চালান। আজ ফোনে তিনি জানান, পর্যটকেরা সুরক্ষিত রয়েছেন। সমস্যা হয়েছে মূলত কুলু থেকে মানালি যাওয়ার পথে। মানালি যাতায়াতের একটাই রাস্তা। যাঁদের কুলু হয়ে ফেরার কথা, তাঁরা আটকে পড়েছেন মানালিতে। কুলু থেকে যে পর্যটকদের মানালিতে যাওয়ার কথা ছিল, তাঁরাও যেতে পারছেন না।

অঞ্জনবাবুর কথায়, ‘‘কুলু-মানালি সড়কে গাড়ি যে একেবারেই চলছে না, তা নয়। তবে যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছেন। শনিবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। খরস্রোতা বিপাশা নদী রবিবার সকাল থেকে রুদ্র মূর্তি ধারণ করেছে। যা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, তা রবিবারের ছবি। রাস্তা বাড়ানোর কাজ কাজ চলছিল। সেই বর্ধিত অংশে গাড়ি, বাস, লরি পার্ক করা হত। সে সবই নদী টেনে নিয়ে গিয়েছে। তবে পর্যটকদের গায়ে আঁচ লাগেনি।’’

কুলু থেকে পরিবার নিয়ে রবিবার মানালি এসেছেন মুম্বইয়ের বাসিন্দা বিভাস দত্ত। তিনি এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘২ ঘণ্টার রাস্তা এসেছি ৮ ঘণ্টায়। গোটা রাস্তা জুড়ে ভয়ঙ্কর বৃষ্টি। ডানদিকে নদী ফুঁসছিল।’’

রবিবার রোটাং পাসে নতুন করে তুষারপাত শুরু হয়। সেখান থেকে অন্তত ২০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। চামেরা বাঁধ থেকে জল ছাড়া শুরু করেছে প্রশাসন। বাসিন্দাদের ইরাবতী নদীর কাছে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

দু’দিন ধরে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে পঞ্জাব-হরিয়ানাতেও। মঙ্গলবার পঞ্জাবে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তরাখণ্ডেও বৃষ্টি ও ধসের জেরে ব্যাহত হয়েছে ‘চারধাম যাত্রা’। বদ্রিনাথ, কেদারনাথ ও যমুনোত্রী মন্দিরে যাওয়ার পথে ধস নেমেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement