গৌতম আদানি। ফাইল চিত্র।
আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা ও কারচুপি করে নিজেদের শেয়ার দর বাড়ানোর অভিযোগের মধ্যেই কংগ্রেস শাসিত হিমাচলপ্রদেশে আদানি গোষ্ঠীর একটি সংস্থার দফতরে হানা দিল রাজ্যের শুল্ক ও কর শাখা। মূলত জিএসটি ফাঁকির সন্দেহেই এই তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে রাজ্যের কর দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন।
বুধবার রাতে হিমাচলের শুল্ক ও কর দফতরের এনফোর্সমেন্ট শাখা সোলানের পরবানুতে আদানি উইলমার সংস্থার একটি দফতরে হানা দেয়। শুল্ক ও কর দফতরের বক্তব্য, ব্যবসার নিরিখে যে পরিমাণ জিএসটি মেটানোর কথা, তার প্রায় সবটাই কাঁচামালে মেটানো কর হিসেবে ছাড় নেওয়া হচ্ছি। এনফোর্সমেন্ট শাখার যুগ্ম কমিশনার জি ডি ঠাকুর জানান, নগদ করের দায় শূন্য দেখানো হচ্ছিল। কিন্তু এই ধাঁচের ব্যবসায় তা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হওয়া উচিত। সেই কারণেই তল্লাশি চালানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, আদানি গোষ্ঠী ও সিঙ্গাপুরের উইলমার সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি আদানি উইলমার ফরচুন ব্র্যান্ডের ভোজ্য তেল, ময়দা, আটার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিপণন করে। সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, তল্লাশি নয়, রুটিন পরীক্ষা হয়েছে। কর আধিকারিকরা কোনও অনিয়ম পাননি।
কিছু দিন আগেই বিজেপিকে সরিয়ে কংগ্রেস হিমাচলে ক্ষমতায় এসেছে। রাহুল গান্ধী মঙ্গলবারই লোকসভায় আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলেছিলেন। বিমানবন্দর থেকে আপেল, সব ব্যবসাতেই আদানি ঢুকে পড়েছে এবং মোদী সরকারের দাক্ষিণ্যে সাফল্য পাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। আজ হিমাচলের কর দফতরের তল্লাশির পরে কংগ্রেস যুক্তি দিয়েছে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠতা না-থাকলে মোদী সরকারও একই রকম তদন্তের নির্দেশ দিত।
কংগ্রেস আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শিল্পপতি গৌতম আদানির সম্পর্ক নিয়ে ‘হাম আদানি কে হ্যায় কৌন’ স্লোগান তুলে প্রশ্ন তুলেছে, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার দরে কারচুপির অভিযোগ সত্ত্বেও ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ ও সেবি-র নিষ্ক্রিয়তার পিছনে কি মোদী সরকারের ‘চাপ’ রয়েছে? কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের অভিযোগ, আদানিদের শেয়ার দর কৃত্রিম ভাবে বাড়ানো হয়েছিল বলেই এখন তা পড়েছে। ফলে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে লগ্নিকারীদের ৯.৫০ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ নষ্ট হয়েছে। জয়রামের অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে ৩৭ হাজার কোটি টাকার লগ্নিকারী মন্টেরোসা গোষ্ঠীর সিইও-র সঙ্গে এক জন দেশ ছেড়ে পালানো হিরে ব্যবসায়ীর সম্পর্ক রয়েছে। এই পলাতক হিরে ব্যবসায়ী আবার গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানির বেয়াই।তাঁর প্রশ্ন— এত কিছু দেখেও সেবি কেন হাত গুটিয়ে বসেছিল!