Supreme Court of India

অনেক বেশি দৃঢ়চেতা হতে হয় মহিলা বিচারপতিদের: হিমা কোহলি

সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে নবম মহিলা বিচারপতি হিমা। দিল্লি হাই কোর্টের প্রথম মহিলা বিচারপতিও তিনি। নারীর অধিকার সংক্রান্ত একাধিক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন হিমা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫২
Share:

সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

মহিলা বিচারপতিদের অনেক বেশি দৃঢ়চেতা হতে হয় বলে মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি হিমা কোহলি।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে নবম মহিলা বিচারপতি হিমা। দিল্লি হাই কোর্টের প্রথম মহিলা বিচারপতিও তিনি। নারীর অধিকার সংক্রান্ত একাধিক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন হিমা। এক সাক্ষাৎকারে তাঁর বক্তব্য, ‘‘১৯৮০-র দশকে মহিলা বিচারপতি হওয়া কঠিন ছিল। আইনজীবী হিসেবেও মহিলাদের সমস্যায় পড়তে হয়।’’ হিমার মতে, ঘরসংসার সামলে কাজ করা মহিলাদের পক্ষে একটি চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি, মহিলাদের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পারিবারিক আদালত, শিশুকল্যাণের মতো ক্ষেত্রে বিচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মহিলা বিচারক বা বিচারপতিদের অন্য মামলার ক্ষেত্রেও দায়িত্ব দেওয়া উচিত। বেঞ্চ তৈরির ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। অনেক ক্ষেত্রে মহিলারা ফৌজদারি মামলা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। প্রথম প্রজন্মের আইনজীবীদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বেশি। কারণ, তাঁদের অফিস বা ফাইল সামলানোর লোক থাকে না।’’

হিমার মতে, ‘‘মহিলার আইনজীবী হওয়ার সিদ্ধান্তই ছিল কঠিন। আরও কঠিন ছিল মহিলা আইনজীবী থেকে বিচারপতি হওয়া। নিম্ন আদালতের বিচারকেরা এ ক্ষেত্রে (পদোন্নতির মাধ্যমে উচ্চ আদালতে আসার ক্ষেত্রে) অনেকটা সুবিধে পান।’’ হিমার মতে, ‘‘কতটা ভাল ভাবে আপনি একটি পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন, তার উপরে নির্ভর করছে আপনি বিচারপতি হওয়ার সুযোগ পাবেন কি না। বিচারপতি হিসেবে অবশ্য আমার সমস্যা হয়নি। সিনিয়র বিচারপতিরা সকলেই সাহায্য করেছেন।’’

Advertisement

সাম্প্রতিক কালে নানা মামলার ক্ষেত্রে নানা বক্তব্য ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যম-সহ নানা ক্ষেত্রে। হিমার মতে, ‘‘দেশবাসীর উচিত, সুপ্রিম কোর্টের উপরে বিশ্বাস রাখা। কারণ, বিচারপতিরা নিজেদের বিবেকের উপরে ভরসা করেই কাজ করেন। কিছু বিতর্কিত মামলার নজির রয়েছে ঠিকই। কিন্তু বিচারপতিরাও অনেক সময়ে ভুল করতেই পারেন। কারণ, তাঁরাও মানুষ।’’

হিমার মতে, ভার্চুয়াল শুনানির ফলে বিচার সরাসরি সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাইরে কারও সঙ্গে যে সম্পর্কই থাক, বিচারপতি হিসেবে লক্ষ্মণরেখা পেরোনো উচিত নয়। পারস্পরিক সম্পর্কের প্রভাব কাজে পড়া অনুচিত। বিচারপতি হিসেবে আমাদের মামলার তথ্যকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। মামলাকারীর মুখকে নয়।’’ একই সঙ্গে চারপাশে, এমনকি অনলাইন মাধ্যমে কী হচ্ছে, তা নিয়েও বিচারপতিদের সচেতন থাকা উচিত বলে মনে করেন হিমা। তাঁর কথায়, ‘‘বিচারপতিরা সমাজমাধ্যমে উপস্থিত থাকেন না। কিন্তু সাধারণ মানুষের সমস্যা তাঁদের জানা উচিত।’’ তরুণ আইনজীবীদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, ‘‘মামলা না থাকলেও বাড়িতে বসে থাকবেন না। আদালতে গিয়ে সওয়াল শুনুন। লাইব্রেরিতে যান। ক্যান্টিনে নয়।’’

বিচারপতি হওয়ার পরে অনেক শখকেই সময় দিতে পারেননি হিমা। তার মধ্যে আছে কবিতা লেখা, গান শোনা আর বাগান করা। পরিবারের পাশাপাশি এই শখগুলিকেও এ বার সময় দিতে চান তিনি। চান জীবনকে বর্ণালির সাত রঙে রাঙিয়ে নিতে।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement