বিধান পরিষদের এই সদস্যের অভিযোগ, দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের বাতাবরণে রাজ্য সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। বিশ্বনাথ জানিয়েছেন, এই বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের কাছে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি।
ফাইল চিত্র।
বোরখা খুলে আসার পরেই কর্নাটকের স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হল। রাজ্যে দশম শ্রেণির পরীক্ষা আজ থেকে শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকার স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, হিজাব খুলে এলে তবেই পরীক্ষায় বসা যাবে।
হুবলি জেলার একটি কেন্দ্রে আজ এক ছাত্রী বোরখা পরে পরীক্ষা দিতে এসেছিল। তাকে পোশাক বদলে আসতে বলা হয়। ওই ছাত্রী সেই নির্দেশ মেনে পোশাক পাল্টে আসার পরেই তাকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ এজন্য ছাত্রীটিকে অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ করেছে। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বাগালকোট জেলার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে। সেখানেও পরীক্ষার্থী ছাত্রীটিকে বোরখা খুলে আসতে বলে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই নির্দেশ মেনে নেয়নি ওই ছাত্রী। এমনকি, পরীক্ষায় বসেনি সে।
বিজেপি-শাসিত কর্নাটকের একাধিক মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, পরীক্ষার সময়ে হিজাব নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে চলবে সরকার। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্র জানিয়েছেন, নিয়ম ভাঙলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার এই বিষয়ে কোনও আপস করবে না। পরীক্ষা দেওয়া যাবে হিজাব খুলে রেখেই। বিদ্যালয় শিক্ষামন্ত্রী বি সি নরেশ বলেছেন, সরকারি নিয়ম ভাঙলে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। কর্নাটকে ৮ লক্ষ ৭৪ হাজার পড়ুয়া এ বছর দশম শ্রেণির পরীক্ষায় বসেছে।
হিজাব নিয়ে কর্নাটক হাই কোর্টের রায়কে পরীক্ষার সময়ে রূপায়ণ করতে নেমেছে রাজ্য সরকার। আর ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। শীর্ষ আদালত অবশ্য বিষয়টি নিয়ে দ্রুত শুনানি করতে রাজি হয়নি। গত সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, এই বিষয়টির সঙ্গে পরীক্ষার কোনও সম্পর্ক নেই।
এদিকে, ২০২১ সালের মিস ইউনিভার্স হরনজ় সান্ধু কর্নাটকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করা নিয়ে মুখ খুলেছেন। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘মুসলিম মেয়েরা যে ভাবে চান, তাঁদের সে ভাবেই থাকতে দেওয়া হোক।’’ আর ‘হিজাবকে সামনে রেখে ছাত্রীদের নিশানা করা হচ্ছে’ বলেই মনে করছেন তিনি। হিজাব নিয়ে কর্নাটকের বিতর্ক এখন নতুন মোড় নিচ্ছে। সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে জুড়ে থাকা কিছু সংগঠন উদুপিতে মন্দির চত্বরে অ-হিন্দুদের ব্যবসা বন্ধ রাখার দাবি তুলছে। তার পরেই সেখানকার একটি মন্দিরের উৎসবে মুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের জায়গা দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে আজ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপিরই শীর্ষস্থানীয় নেতা এইচ বিশ্বনাথ। বিধান পরিষদের এই সদস্যের অভিযোগ, দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের বাতাবরণে রাজ্য সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। বিশ্বনাথ জানিয়েছেন, এই বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের কাছে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি।