হাই কোর্টের প্রশ্ন, হিজাব নিষিদ্ধের সরকারি নির্দেশ কি আগেই ছিল? ফাইল চিত্র।
কর্নাটক হাই কোর্টে চলা হিজাব মামলার শুনানি মুলতুবি রাখা হল শুক্রবার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছেন উদুপির সরকারি কলেজের এক ছাত্রী। সরকার পক্ষের আইনজীবী আদালতের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আরও সময় চেয়ে নেন।
তবে এ দিন আদালতে বেশ কয়েকটি মন্তব্য করেছেন কর্নাটক রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। মোট তিনটি বিষয়ে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘‘আমাদের প্রথম পর্যালোচনা, হিজাব নিষিদ্ধের বিষয়টি শিক্ষা সংক্রান্ত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। দ্বিতীয়ত, ইসলাম ধর্মে হিজাবের ব্যবহার যে অপরিহার্য, এমনটা নয়। তৃতীয়ত, হিজাব পরার অধিকারের বিষয়টি সংবিধানের ১৯ (১) অনুচ্ছেদ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়।’’
কর্নাটক হাই কোর্টে সরকার পক্ষ এমনও সওয়াল করে যে, সুপ্রিম কোর্ট যেমন শবরীমালা কিংবা শায়রা বানো (তিন তালাক বিষয়ক) মামলাকে সাংবিধানিক নীতি ও ব্যক্তিগত মর্যাদার বিষয় হিসেবে বিবেচনা করেছে, হিজাব মামলাকে সেই স্তরে উন্নীত হতে হবে।
অন্য দিকে মামলার শুনানিতে কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, "এক পক্ষ বলছেন, হিজাব নিষিদ্ধের পিছনে কোনও জোরাজুরি ছিল না। বরং বিষয়টিকে জটিল করেছে কিছু সমাজবিরোধী ব্যক্তি। তা হলে কেন থানায় এফআইআর দায়ের হল না?"
হাই কোর্টের প্রশ্ন, হিজাব নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারি নির্দেশ কি আগেই ছিল? এক দিকে সরকার পক্ষ বলছে, কারা হিজাব নিষিদ্ধ করলেন তা খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আবার অ্যাডভোকেট জেনারেল বলছেন, সরকারই এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়।
উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হিজাব-বিতর্ক তীব্র আকার নিয়েছে। হিজাব নিষেধাজ্ঞার পক্ষে-বিপক্ষে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। এর আগে হাই কোর্টে এক আন্দোলনকারী ছাত্রীর আইনজীবী সওয়াল করেন যে, কলেজে যদি দোপাট্টা, বালা, ওড়না ব্যবহৃত হয়, তা হলে হিজাবে আপত্তি কেন? হিজাবের মতো এগুলিও একেকটি সম্প্রদায়ের দ্বারা ব্যবহৃত হয়। হাই কোর্ট তার পরবর্তী সিদ্ধান্তে আসা পর্যন্ত কর্নাটক রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনে হিজাব পরে যাওয়া যাবে না বলে জানানো হয় একটি অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশে।