ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় গুরুত্ব বাড়ল মহিলাদের। ৫ থেকে মহিলা মন্ত্রী বেড়ে হল ১১। কিন্তু তাতেও শতাংশের হিসাবে রাজ্যের চেয়ে খানিকটা পিছিয়েই থাকল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। মমতা মন্ত্রিসভায় ৪৪ জন মন্ত্রীর মধ্যে যেখানে ৮ জন মহিলা, সেখানে ৭৮ জনের মোদী মন্ত্রিসভায় রয়েছেন ১১ জন।
বুধবারের রদবদলের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় স্থান পেলেন ১১ জন মহিলা। একে ইতিমধ্যেই ঐতিহাসিক বলে দাবি করেছে কেন্দ্র। ২০০৪ সালের মনমোহন সরকারের পর এই প্রথম কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় একসঙ্গে স্থান পেলেন এত জন মহিলা।
দ্বিতীয় মনমোহন সরকারের মন্ত্রিসভাতে ১০ জন মহিলা মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৪ সালে মোদী মসনদে বসার পর সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছিল ৬। মোদীর দ্বিতীয় জমানাতেও মোট ৫৩ জন মন্ত্রীর মধ্যে ছিলেন ৫ জন মহিলা। রদবদলের আগে মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হিসাবে ছিলেন নির্মলা সীতারামন, স্মৃতি ইরানি। প্রতিমন্ত্রী ছিলেন সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি, রেণুকা সিংহরা। এ বার নয়া মন্ত্রিসভায় জায়গা পেল সাত নতুন মুখ। কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র শরিক আপনা দলের সাংসদ অনুপ্রিয়া পটেল। অবশ্য প্রথম মোদী মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন তিনি।
কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন কর্নাটকের সাংসদ শোভা কারান্দলাজে। বিদেশ মন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে দিল্লির আইনজীবী-সাংসদ মীনাক্ষী লেখিকে। কেন্দ্রীয় বস্ত্র ও রেল মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন দর্শনা জার্দোস। সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে অসমের সাংসদ প্রতিমা ভৌমিককে। নতুন মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেন ভারতী পওয়ার।
মোদী মন্ত্রিসভায় মহিলাদের গুরুত্ব বৃদ্ধি নিয়ে টুইটারে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি লেখেন, ‘‘মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়ন এবং আত্মনির্ভর ভারতের উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা-ই প্রতিফলিত হচ্ছে নয়া মন্ত্রিসভায়।’’
এ বিষয়ে বাংলায় বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘‘বিজেপি বরাবরই নারীদের সম্মান করে এসেছে। এটাই আমাদের দলের আদর্শ ও নীতি। বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্য দিয়ে মেয়েদের গুরুত্ব বাড়ানোর বিষয়টি গত কয়েক বছরে বুঝিয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। নারী ক্ষমতায়ন বিজেপি-র ‘সবকা কা সাথ, সবকা বিকাশ’ নীতিরই অঙ্গ। সেই আদর্শই যে বজায় রয়েছে, তাই বোঝা গেল মোদীর নতুন মন্ত্রিসভায়।’’
তবে মমতার মন্ত্রিসভা এবং মোদীর মন্ত্রিসভা তুলনা প্রসঙ্গে বাংলার পঞ্চায়েত দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শিউলি সাহা বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই মহিলাদের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। সরকারে এসে নারীদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা করে তিনি চেয়েছেন, সমাজের নানা স্তরেই যেন অগ্রাধিকার পান মহিলারা। দেশের অগ্রগতিতে মহিলারা অংশগ্রহণ না করলে পিছিয়েই থাকতে হয়— বিবেকানন্দের এই নীতিতেই বিশ্বাসী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর থেকে পাঠ নেওয়া উচিত মোদী সাহেবের।’’