সতর্কতা জারি হয়েছে একাধিক বায়ুসেনা ঘাঁটিতে।—ফাইল চিত্র।
ভারতে বড় ধরনের হামলার ছক কষছে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। উরির কায়দায় ফের ফিদায়েঁ হামলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। গোয়েন্দা সূত্রে এমন খবর পেয়ে এ বার মাঝারি সতর্কতা জারি হল জম্মু-কাশ্মীর এবং পঞ্জাবে বায়ুসেনার একাধিক ঘাঁটিতে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বায়ুসেনার এক আধিকারিক এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন। ১০-১২ জন জইশ জঙ্গি ভারতে হামলার ছক কষছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর মিলেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তার পরেই বায়ুসেনার তরফে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়।
উপত্যকার শ্রীনগর, অবন্তিপোরা ও জম্মু, পঞ্জাবের পঠানকোট এবং উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের কাছে হিন্দন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে মাঝারি সতর্কতা জারি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কোথাও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও খামতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকদের।
আরও পড়ুন: বিশ্বাস করি, মোদী মুসলিম মৌলবাদ মোকাবিলা করতে পারবেন, বললেন ট্রাম্প
জঙ্গি হামলার সম্ভাবনা নিয়ে দিন কয়েক আগেই কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ। তাতে বলা হয়, পঞ্জাব সংলগ্ন সীমান্তে আকাশপথে অস্ত্রশস্ত্র এবং গ্রেনেড পৌঁছে দিচ্ছে পাকিস্তান। তাই হামলার সন্দেহ একেবারেই অমূলক নয়। তবে তেমন পরিস্থিতি দেখা দিলে ভারতও যে ছেড়ে কথা বলবে না, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হওয়ার পরিস্থিতি এলে, তার উপযুক্ত জবাব দেবেন আমাদের জওয়ানরা। সেনাবাহিনী হোক বা বায়ুসেনা অথবা নৌবাহিনী, শত্রুপক্ষকে পরাজিত করতে জান লড়িয়ে দেবে সকলে।’’
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারত-পাক টানাপড়েন যখন অব্যাহত, সেই সময়েই ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান জঙ্গিদের লেলিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ গোয়েন্দাদের। আন্তর্জাতিক চোখরাঙানি এড়াতে সম্প্রতি সংগঠনের নাম পাল্টে ‘মজলিস উরাসা-ই-শুহুদা জম্মু ওয়া কাশ্মীর’ করেছে জইশ। মৌলানা মাসুদ আজহারের ভাই মুফতি আবদুল রউফ আসগারের নেতৃত্বেই তারা ভারতে বড় ধরনের নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা করছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। বালাকোট ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের চাম, দুধনিয়াল, চিরিকোট, আথমুকাম এবং উপত্যকার গুরেজ সেক্টরের উল্টো দিকে অবস্থিত তৌবাত এবং দরমত এলাকায় প্রশিক্ষণ শিবির খুলে বসেছে তারা।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাস-বিরোধী মঞ্চে মোদীর কড়া বার্তা চিন-আমেরিকাকেও
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত-পাক সীমান্ত বরাবর ঘাঁটি গেড়েছে জইশ জঙ্গিরা। ধীরে ধীরে ঢাঙ্গু-পঠানকোটের দিকে এগিয়ে আসতে পারে তারা, যাতে মোবাইলের টাওয়ার ধরে অনলাইন টাকা লেনদেনে সুবিধা হয়। এই জঙ্গিদের একটা দল আবার জম্মু-কাশ্মীরের দিকেও এগোতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেনা শিবির লক্ষ্য করে আত্মঘাতী হামলা চালাতে পারে তারা।