সনিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন হেমন্ত সোরেন। পাশে রাহুলও। নিজস্ব চিত্র
মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সঙ্গে জোট গড়ায় সায় ছিল না রাহুল গাঁধীর। তবু সনিয়া গাঁধী করেছেন। রাহুলের এক সময়ের ‘একলা-চলো’র স্লোগান বদলে ঝাড়খন্ডে আগেভাগেই রাজ্য নেতাদের উপরে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন সনিয়া। শরিক নেতা হেমন্ত সোরেনকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। সেই জোট জেতার পরে হেমন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন রবিবার। আজ তিনি প্রবেশ করলেন দশ জনপথে। ঠিক যেমন ক’দিন আগে জনপথে ঠাকরে পরিবারের প্রথম প্রতিনিধি হিসেবে এসেছিলেন আদিত্য।
রাহুল গাঁধী দায়িত্ব ছাড়ার পর কি সনিয়ার কৌশল কাজে দিচ্ছে? এই প্রশ্ন উঠছে কংগ্রেসের মধ্যে থেকে। যদিও রাহুলকেই ফের সামনে এগিয়ে দিচ্ছেন সনিয়া। কংগ্রেসের জন্মদিন ২৮ ডিসেম্বর। তার এক দিন পরে শপথ নেওয়ার কথা হেমন্তের। রাঁচী থেকে বেরোনোর সময়ে জানিয়ে এসেছিলেন, সনিয়া, রাহুল ও প্রিয়ঙ্কাকে শপথে আমন্ত্রণ জানাতে দিল্লি আসছেন। কিন্তু জনপথ থেকে বেরোনোর পরে প্রিয়ঙ্কার নাম নিলেন না। শুধু বললেন, ‘‘সনিয়া গাঁধীকে আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলাম। রাহুল গাঁধীর সঙ্গেও দেখা হয়েছে। তাঁকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’’ তাহলে উভয়েই উপস্থিত থাকছেন শপথে? হেমন্তের জবাব, ‘‘রাহুল গাঁধী যাবেনই। সনিয়াজি বলেছেন, যেতে পারেন কি না দেখবেন।’’ হেমন্ত জানিয়েছেন, তিনি নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহকেও আমন্ত্রণ জানাবেন।
একের পর এক রাজ্যে বিজেপির হার আর নয়া নাগরিকত্ব আইন আসার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেত্রীরা বিরোধীদের একজোট করার ডাক দিচ্ছেন। হেমন্ত আজ নিজেই বলেন, ‘‘সকলে অভিনন্দন জানিয়েছেন। শপথে কারা আসবেন অবশ্য ঠিক নেই।’’ কিন্তু বিরোধী ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বুঝছেন কংগ্রেসের নেতারা। কিন্তু আগামী দিনে নিজেদের নেতৃত্বের স্বরূপ কী হবে, তা বুঝে উঠতে পারছেন না। রাহুলকে ফেরানো নিয়েও দলের মধ্যে নানা মত রয়েছে। ঝাড়খণ্ডের ফলের পর কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘রাহুল গাঁধীকে কি সভাপতি পদে ফেরানো হবে?’’ আজাদের জবাব: ‘‘রাহুল গাঁধী সব সময়ে কংগ্রেসে ছিলেন, আছেন, থাকবেনও। সভাপতি থাকুন বা না থাকুন।’’
২৮ ডিসেম্বর দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে সনিয়া গাঁধী বড় কর্মসূচি করতে চাইছেন। প্রিয়ঙ্কাকে সে দিন লখনউতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। অসম থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রাহুলকে। কিন্তু রাহুল সেখানে যাবেন না কি দিল্লিতে প্রচারের আলোয় থাকবেন, এখনও ঠিক নয়। যদিও তার এক দিন আগে নিজের ঘনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেলের আমন্ত্রণে ছত্তীসগঢ় যেতে পারেন রাহুল। আদিবাসী নৃত্য উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রিয়ঙ্কাকেও।