বৃষ্টিতে থইথই মুম্বইয়ের রাস্তাঘাট। ছবি সৌজন্য টুইটার।
কোথাও হাঁটু সমান জল, তো কোথাও আবার কোমর সমান। রাতভর প্রবল বৃষ্টিতে মুম্বইয়ের ছবিটা ঠিক এ রকমই। আবহাওয়া দফতর আগেই মুম্বইয়ে ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা দিয়েছিল। সেই পূর্বাভাস অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয় মুম্বই ও মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তে। সকাল হতে হতেই শহরের বহু জায়গা প্লাবিত হয়ে পড়ে।
করোনার ক্রমবর্ধমান সংক্রমণে রাশ টানতে এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছে মুম্বই প্রশাসন। তার উপর এই প্রবল বৃষ্টিতে শহরের বহু জায়গায় বন্যার মতো পরিস্থিতি, প্রশাসনের উদ্বেগ এক ধাক্কায় আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
মৌসম ভবন সূত্রে খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় শহরের পশ্চিম ভাগে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। মৌসম ভবনের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল কে এস হোসালিকার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে পশ্চিম মুম্বইয়ের সান্তাক্রুজে। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৮৬.৪ মিলিমিটার। অন্য দিকে, কোলাবায় বৃষ্টি হয়েছে ১৪৭.৮ মিলিমিটার, ঠাণেতে ১১৯.৮ মিলিমিটার এবং রত্নগিরিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩২.৫ মিলিমিটার।
আরও পড়ুন: কৃষি বিল নিয়ে আপত্তি জানাতে বিকেলে রাষ্ট্রপতির কাছে যাচ্ছেন বিরোধীরা
আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও সতর্ক করেছে মৌসম ভবন। ইতিমধ্যেই পালঘর, মুম্বই, ঠাণে এবং রায়গড়ে কমলা সতর্কতা জারি করেছে তারা। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই এলাকাগুলোতে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইবে বলেও সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
রাতভর বৃষ্টিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নীচু এলাকাগুলো। সেখানে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকাগুলি থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। পরিস্থিতির উপর নজর রেখে সমস্ত অফিসে ছুটি ঘোষণা করেছে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন।
মিঠি নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। নদীর ধারে বসবাসকারী ক্রান্তিনগরের বাসিন্দাদের ইতিমধ্যেই অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাস, ট্রেন পরিষেবা পুরোপুরি থমকে গিয়েছে। সেন্ট্রাল ও হারবার শাখার বিভিন্ন জায়গায় লাইনের উপর জল জমে যাওয়ায় ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দূরপাল্লার বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। সময় পরিবর্তন করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ট্রেনেরও।
মুম্বইয়ের মিউনিসিপ্যাল কমিশনার ইকবাল সিংহ চহাল শহরবাসীকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। অনত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দোকান, বাজার বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।