উত্তরাখণ্ডে ফুঁসছে নদী। বন্যার আশঙ্কা। ছবি: পিটিআই।
বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত প্রায় গোটা উত্তর ভারত। প্লাবন এবং ধসে জেরবার হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড। এই দুই রাজ্যে এখনই দুর্ভোগ কমছে না। আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন (আইএমডি)। ১৭ জুলাই পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরাখণ্ডে। জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। এখনও ওই দুই রাজ্যে আটকে বহু পর্যটক। বৃষ্টির কারণে প্লাবন এবং দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম ভারতে মৃত্যু হয়েছে ১৪৫ জনের। বেহাল রাজধানী দিল্লি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল সেনার সাহায্য চেয়েছেন।
গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সব থেকে বেশি মৃত্যু হয়েছে হিমাচল প্রদেশে। সেখানে মারা গিয়েছেন ৯১ জন। বৃষ্টির জেরে উত্তরপ্রদেশে মারা গিয়েছেন ১৪ জন, উত্তরাখণ্ডে মারা গিয়েছেন ১৬ জন, পঞ্জাবে ১১ জন, হরিয়ানায় ১৬ জন।
উত্তরাখণ্ডে ১৭ জুলাই পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। দেহরাদূনে আবহাওয়া দফতরের প্রধান বিক্রম সিংহ বলেন, ‘‘হরিদ্বার, পাউরি গাঢ়োয়ালে বৃষ্টির প্রভাব সব থেকে বেশি পড়তে পারে। ১৬ জুলাই, রবিবার বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে পারে। মানুষকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।’’ বুধবার উত্তরাখণ্ডের রুরকিতে ৩০০ মিলিমিটার, হরিদ্বারের কাছে লাকসারে ২২০ মিলিমিটার, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে ২১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বুধবার রুদ্রপ্রয়াগে বৃষ্টি হয়েছে ১০০ মিলিমিটার।
গত ৮ জুলাই থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তরপূর্ব ভারতে। তার জেরে জনজীবন বিপর্যস্ত। এর মধ্যে উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশে এখনই থামছে না বৃষ্টি। মৌসম ভবনের বিজ্ঞানী সুরেন্দ্র পাল বলেন, ‘‘বৃষ্টির তীব্রতা আগের থেকে কমেছে। তবে এখনও থামেনি। ইতিমধ্যে এত বৃষ্টি হয়েছে যে মাটি এতটাই নরম হয়ে উঠেছে যে, তার জলধারণ ক্ষমতা কমে গিয়েছে। সে কারণে বন্যা এবং ধসের সম্ভাবনা আরও বাড়ছে। বিশেষত পাহাড়ি এলাকায়।’’
ইতিমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দিল্লিতে। লালকেল্লা, রাজঘাট জলমগ্ন। জল ঢুকেছে সুপ্রিম কোর্টেও। ১৬ জুলাই, রবিবার পর্যন্ত বন্ধ দিল্লির সব স্কুল। শুক্রবারও দিল্লি এবং আশপাশের এলাকায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জলের নীচে মুম্বই শহরের অনেক এলাকা। হিমাচলের লাহৌল, স্পিতিতে পাঁচ দিন আটকে থাকার পর বৃহস্পতিবার উদ্ধার করা হয়েছে ২৫৬ জন পর্যটককে। সাংলা এবং কিন্নরে আটকে থাকা ১০০ জন পর্যটককে হেলিকপ্টারে করে তুলে আনা হয়েছে। ১৭ জুলাই, সোমবার থেকে আবার মধ্যপ্রদেশে বৃষ্টি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিসে। হাওয়া অফিসের পূ্র্বাভাস, ১৬ জুলাই, রবিবার উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপর ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। সেই সঙ্গে নতুন করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে আগামী দিনে হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান বৃদ্ধি পেতে পারে।