যমুনার জলে ভেসে গিয়েছে দিল্লির বহু রাস্তাঘাট। ছবি: পিটিআই ।
লালকেল্লা আগেই ছুঁয়েছিল। এ বার সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে পৌঁছে গেল যমুনার জল। ডুবে গেল রাজঘাট এলাকাও। যার জেরে উদ্বিগ্ন দিল্লির প্রশাসন। দিল্লি সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লির সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের একটি যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যাওয়ার কারণে যমুনার জল শহরের দিকে বয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির কিছু এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলেও জানিয়েছে প্রশাসন। সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের আধিকারিক এবং বিপুল সংখ্যক কর্মী জলের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করেছেন।
বৃষ্টিতে যমুনার জল বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে দিল্লির বহু এলাকা জলমগ্ন। যমুনার জলে ভেসে গিয়েছে দিল্লির বহু বাড়িঘর, বাজার, রাস্তাঘাট, পর্যটনস্থল। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাজধানীর কোথাও কোমর পর্যন্ত আবার কোথাও বুক পর্যন্ত জল। রাস্তাঘাটে জল জমায় যানচলাচলও বন্ধ হয়েছে।
যদিও এর মধ্যেই আশার কথাও শুনিয়েছে অরবিন্দ কেজরীওয়াল সরকার। সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সারা দিন যমুনার জলস্তর স্থিতিশীল ছিল এবং সন্ধ্যার পর থেকে তা কিছুটা নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার রাতে যমুনার জলস্তর ছিল ২০৮.৬৬ মিটার। শুক্রবার সকালে তা ২০৮.৪৬ মিটারে নেমে এসেছে। ওয়াটার কমিশনের আশা শুক্রবার দুপুরের পর থেকে যমুনার জলস্তর আরও কমবে এবং দুপুর ১ টা নাগাদ তা ২০৮.৩০ মিটারে নেমে যাবে।
দিল্লিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ১৬ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীর সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখারও নির্দেশ দিয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ) সরকার। দিল্লির বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। বৃহস্পতিবার ফ্রান্স সফরে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেখান থেকেই তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করে দিল্লির পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন বলে সরকারি সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, যমুনার জল বাড়তে থাকায় ওয়াজ়িরাবাদ, চন্দ্রওয়াল এবং ওখলা জল শোধনাগারগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে রাজধানী পানীয় জলের সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বাসভবনের এলাকাতেও ঢুকে পড়েছে জল। শহরের নানা প্রান্তে দুর্যোগ কবলিতদের উদ্ধারকাজ শুরু করেছে প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে রবিবার পর্যন্ত সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। বেসরকারি সংস্থাগুলিতে বাড়ি থেকে কাজের (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) পরামর্শ দিয়েছেন কেজরীওয়াল।