ছবি এএফপি।
উত্তর এখনও অজানা।
করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি কত দিন সক্রিয় থাকবে, তা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছেন না ভারতের স্বাস্থ্যকর্তারা। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর প্রধান বলরাম ভার্গব আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘কোভিড সম্পর্কে আমাদের কেবল ছয় থেকে আট মাসের অভিজ্ঞতা হয়েছে। ফলে এখনই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।’’ তবে ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা যেমন নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নিতে হয়, করোনার ক্ষেত্রে তা-ই হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ভার্গব।
কোনও মানুষ একটি রোগে আক্রান্ত হলে বহিরাগত জীবাণুর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য তাঁর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও তৈরি হয় অ্যান্টিবডি, যা পরবর্তী কালে তাঁকে একই সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচায়। কিন্তু নোভেল করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি শরীরে কত দিন সক্রিয় থেকে সংশ্লিষ্ট মানুষটিকে ফের করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাবে? তিন মাস, ছ’মাস, এক বছর, নাকি সারা জীবন? এখানেই ধন্দে সারা বিশ্বের চিকিৎসক ও গবেষকেরা।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় স্যালুটের জবাবে করজোড়ে নমস্তে রাজনাথের
মানবদেহে করোনার অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব নিয়ে ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু হয়েছে নানা দেশে। সম্প্রতি আইসল্যান্ডে করোনা আক্রান্তদের নিয়ে সমীক্ষা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, রোগীরা সুস্থ হয়ে ওঠার পরে প্রায় চার মাস তাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডি থাকছে। আবার ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, চিনা রোগীদের একাংশের শরীরে দু’থেকে তিন মাসের পরেই অ্যান্টিবডি দ্রুত কমতে শুরু করেছে। এমনকী উপসর্গহীন ও উপসর্গযুক্ত রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডির তারতম্য লক্ষ্য করা গিয়েছে। গবেষকদের মতে, ভাইরাসের চরিত্র, সংক্রমণের হার— এ সবের উপরেও অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব নির্ভর করে। ভারতে সুস্থ হয়ে ওঠা কোভিড রোগীদের শরীরে কত দিন পর্যন্ত অ্যান্টিবডি সক্রিয় থাকছে, ভার্গব তা আজ স্পষ্ট করেননি ঠিকই। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, এ দেশেও রোগীদের শরীরে গড়ে তিন থেকে চার মাস পর্যন্ত অ্যান্টিবডির উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। যদিও পুরো বিষয়টি বুঝতে আরও সময় প্রয়োজন। অন্তত এ বছরের শেষ নাগাদ স্পষ্ট হতে পারে, কত দিন শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি থাকছে।
আরও পড়ুন: ৮৪ হাজার সংক্রমণে প্রশ্ন আনলক ঘিরে
আইসিএমআর প্রধান যদিও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এক বছরের বেশি ওই অ্যান্টিবডি সক্রিয় থাকার সম্ভাবনা কম। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো করোনাও মূলত শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। দু’টি সংক্রমণের চরিত্রগত মিল রয়েছে। বর্তমানে ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে সাধারণত প্রতি বছর টিকার ডোজ় নিতে হয়।’’ করোনার ক্ষেত্রেও তা-ই হবে বলে আপাতত মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ।