উজ্জয়িনীতে মাতাপ্রসাদ এবং ভাবেশ্বরী পরস্পরের সঙ্গে দেখা করেন। প্রেমের সূত্রপাত এই উজ্জয়িনী থেকেই। তার পর সেই প্রেম আরও গভীর হয়।
মাতাপ্রসাদ এবং ভাবেশ্বরী দেবী।
কথায় আছে, প্রেমের কোনও বয়স নেই। সীমানা নেই। কোনও কিছুই বাধ মানে প্রেমের সামনে। যে কোনও বয়সেই আসতে পারে প্রেম। আর তেমনই এক ছবি উঠে এল উত্তরপ্রদেশের আগরা শহর থেকে।
প্রেমিকের বয়স ৮০। প্রেমিকা ৭০। তাতে কী! প্রেমের কি কোনও বয়স আছে? সমাজের চোখে যেন আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন অশীতিপর মাতাপ্রসাদ সৌথিয়া এবং ভাবেশ্বরী দেবী। শুধু প্রেমই নয়, দু’জনে বাকি জীবন এক সঙ্গে কাটানোর সঙ্কল্পও করেছেন। ফলে সাতপাকে বাঁধা পড়ে এক হয়েছে চার হাত।
মাতাপ্রসাদ খাদ্য সুরক্ষা দফতরের এক জন আধিকারিক ছিলেন। অবসরপ্রাপ্ত। তিন ছেলে। প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বেশ কয়েক বছর আগে মাতাপ্রসাদের স্ত্রীর মৃত্যু হয়। অবসরের পর থেকে জনসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন মাতাপ্রসাদ। বিশেষ করে বয়স্ক যাঁরা, তাঁদের দেখাশোনা করেন তিনি। এই কাজে তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য এমন এক জনকে খুঁজছিলেন যিনি সব সময় তাঁর পাশে থেকে কাজ করবেন। ফেসবুকে কাজের বিবরণ দিয়ে একটি পোস্টও করেন মাতাপ্রসাদ।
সেই পোস্ট দেখে আগ্রহী হন মুম্বইয়ের ভারসোভার বাসিন্দা ভাবেশ্বরী দেবী। তিনি মাতাপ্রসাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। উজ্জয়িনীতে মাতাপ্রসাদ এবং ভাবেশ্বরী পরস্পরের সঙ্গে দেখা করেন। প্রেমের সূত্রপাত এই উজ্জয়িনী থেকেই। তার পর সেই প্রেম আরও গভীর হয়। মাতাপ্রসাদের সংস্থায় কাজও শুরু করেন ভাবেশ্বরী।
ভাবেশ্বরীর এক মেয়ে। স্বামী মারা গিয়েছেন অনেক আগেই। ফলে দু’জনের একাকিত্ব যেন দুই প্রবীণকে আরও কাছে এনেছিল। তবে সেটা বেশি দিন চলতে দেননি। প্রেমকে পরণতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দু’জনেই। মাতাপ্রসাদ এবং ভাবেশ্বরী তাঁদের সন্তানদের সম্মতি নিয়েই শেষমেশ ছাদনাতলায় গিয়ে সমাজের সামনে আরও একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
বৃদ্ধ নবদম্পতি স্থির করেছেন বৃদ্ধাশ্রম খুলে গরিব, অসহায়দের সেবা করবেন। মাতাপ্রসাদ এবং ভাবেশ্বরীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁদের ছেলেমেয়েরা।