মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। শুক্রবার লখনউয়ে। ছবি: পিটিআই।
ভাই: মা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছে। কিন্তু পুলিশ বাধা দিচ্ছে।
সাংবাদিক: পুলিশ কী করছে?
ভাই: বাড়ির চারদিক ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ছাদে, গ্রামে, রাস্তায়। সব জায়গায় পুলিশ।
সাংবাদিক: কথা বলতে বাধা দিচ্ছে?
ভাই: সবাইকে ভয় দেখাচ্ছে। সকলকে আটকে রেখেছে।
সাংবাদিক: ফোন আছে বাড়ির লোকেদের কাছে?
ভাই: সবার ফোন নিয়ে নিয়েছে। সবাইকে মেরেছে। জেঠার বুকে লাথি মেরেছিল। উনি অজ্ঞান হয়ে যান।
সাংবাদিক: কেউ এসেছিল তোমাদের বাড়িতে?
ভাই: ইনস্পেক্টর হুমকি দিয়ে গিয়েছেন— কেউ বেরোবে না।
সাংবাদিক: মা কী করছেন?
ভাই: বসে আছে চুপচাপ। সবাইকে মারছে তো।
সাংবাদিক: বাড়ির লোকেদের কাছে ফোন আছে?
ভাই: সব ফোন নিয়ে সুইচ অফ করে রেখে দিয়েছে পুলিশ।
সাংবাদিক: তোমাদের ঘরেও পুলিশ? কত জন?
ভাই: ১৫০-২০০ পুলিশ...
সাংবাদিক: গ্রামের বাইরে এলে কী করে? পুলিশ ধরল না?
ভাই: খড় কাটতে যাচ্ছি বলে চলে এসেছি। ধরার চেষ্টা করেছিল। লুকিয়ে জমির মধ্যে দিয়ে এসেছি। পুলিশ দেখে খেতে লুকিয়েছিলাম।
সাংবাদিক: বাড়ির লোকেরা কী বলছেন?
ভাই: বাড়ির লোকেরা বলছে, মিডিয়ার লোকেদের ডেকে নিয়ে আয়। মিডিয়াকে সব বলতে চাইছে।
সাংবাদিক: ফোন নিল কেন?
ভাই: ভিডিয়ো পাঠাচ্ছিলাম। তাই কেড়ে নিয়েছে।
ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। মাটিতে বসেই রিপোর্টিং সাংবাদিক প্রতিমার।
চোরের মতো খেত দিয়ে এলেন কেন?’
(শুক্রবার সকালে নির্যাতিতার গ্রামে ঢোকার চেষ্টা এবিপি নিউজের সাংবাদিক প্রতিমা মিশ্রের। সঙ্গে চিত্রসাংবাদিক মনোজ অধিকারী। তার পর...)
পুলিশ অফিসার: ভিতরে যাবেন না।
সাংবাদিক: কেন?
পুলিশ আধিকারিক১: উপরের নির্দেশ আছে।
সাংবাদিক : কে নির্দেশ দিয়েছে?
আধিকারিক১: উপরতলার আধিকারিক।
• সাংবাদিক খেতের আল ধরে এগোতে না এগোতেই দেখা যায়, পুলিশ বাহিনী আসছে। আবার পথ আটকানো হয়।
আধিকারিক১: আর এগোবেন না। বারণ আছে।
সাংবাদিক: কার বারণ?
আধিকারিক১: উপরওয়ালাদের।
সাংবাদিক: কার নির্দেশ? লিখিত নির্দেশ দেখান।
আধিকারিক১: দেখাতে পারব না। ডিএম-এর অনুমতি নিয়ে আসুন।
পুলিশ আধিকারিক ২: আপনি ফিরে যান। মেন রাস্তা দিয়ে না এসে চোরের মতো খেত দিয়ে এলেন কেন?
সাংবাদিক: চোরের মতো মানে? সাংবাদিক চোর? মেন রাস্তা তো আপনারা ব্যারিকেড করে রেখেছেন।
পুলিশ আধিকারিক ২: মেন রাস্তা দিয়ে তো আসেননি। কে কেন খেত দিয়ে চলে আসছে, কী করে বুঝব।
পুলিশ আধিকারিক ৩: সিট তদন্ত করছে। আপনারা যেতে পারবেন না, কেউই যেতে পারবেন না।
সাংবাদিক: সিট তো চলে গিয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট ও তাঁর কাজ সেরে চলে গিয়েছেন। আমরা তিন দিন ব্যারিকেডের বাইরে ছিলাম। সহযোগিতা করেছি। এখন আমাদের যেতে দিন।
পুলিশ আধিকারিক ৩: যেতে দেওয়া যাবে না। তদন্ত চলছে।
• ম্যাজিস্ট্রেট নিধি ভরদ্বাজ ঘটনাস্থলে আসেন।
সাংবাদিক: ম্যাডাম আমাদের যেতে দিন। আমাদের কাজ নির্যাতিতার পরিবারের কথা তুলে ধরা। আপনিও চলুন। পরিবার যা বলে শুনব, কোনও কথা বলব না।
ম্যাজিস্ট্রেট: যাওয়া যাবে না। আইনশৃঙ্খলার বিষয়।
সাংবাদিক: কোথায় লিখিত নির্দেশ?
ম্যাজিস্ট্রেট: থানায় যান, ওখানে পেয়ে যাবেন।
সাংবাদিক: থানায় কেন যাব? আপনারা তো এখানে আটকাচ্ছেন।
ম্যাজিস্ট্রেট: উত্তর নেই।
সাংবাদিক: আপনিও আমাদের সঙ্গে চলুন।
ম্যাজিস্ট্রেট: করোনা আছে, যাওয়া যাবে না।
• পরে সাংবাদিককে পুলিশের গাড়িতে তুলে বড় রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয়।